লেখার শুরুতেই বলে রাখি এটা কোন ব্যাক্তি, গোষ্ঠীকে সুনির্দিষ্টভাবে আক্রমণ করার জন্যে লেখা না। আমি যতদিন ধরে গ্রুপে আছি সেই থাকা থেকে যদি কোন দায়বদ্ধতা বা ভালবাসা তৈরি হয়ে সেখান থেকেই এই লেখাটার প্রয়োজন অনুভব করছি। আমি কয়েকটা কেস স্টাডি থেকে গ্রুপের ভাষা কেমন হবে বা হওয়া উচিৎ সেটার প্রয়োজনীয়তাই বুঝাতে চাইবো।

১) একদম শুরু থেকে আমি গ্রুপে নেই। জার্মানীতে আসার পরে ধীরে ধীরে গ্রুপে লেখা শুরু করি যদিও আমার লেখা তেমন কোন গুরুত্ববহন করে বলে আমি মনে করিনা। সেই সময় এই গ্রুপের প্রধাণ কলাকুশলীদের আমি চিনতাম না। যাকে চিনতাম প্রধাণ হিসেবে তার গল্প বলে সময় দির্ঘায়িত করতে চাচ্ছিনা। সে সময় দেখতাম কেউ প্রশ্ন করলে কোন নির্দিষ্ট কিছু ব্যাক্তি তীব্র শ্লেষাত্বক ভাষাতে উত্তর দিতেন। এরপরে কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে বের হয়ে আসি। পরের ঘটনা সবারই জানা।

২) রাশেদুলের সাথে একটা বড় ভাই ছোট ভাই এর সম্পর্ক হয়েছে। কোনদিন দেখা না হলেও আমাদের মধ্যে একটা দায়িত্ববোধ সব সময়ই কাজ করে। কেনো রাশেদুলকে ভালো লাগে? অন্যতম কারণ সে একজন আমার ভাষাতে ‘কুল রিডার’। সে ঠান্ডা না। একদমই হিমাংকের নিচে থেকে যে কারো মাইন্ড রিড করতে পারে। সত্যি কথা বলতে গেলে আমি এটা অত্যান্ত শ্রদ্ধার চোখেই দেখি। আমার ব্যাক্তিগত ঝামেলাতে তাকে কল দিলে সে হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দেবে,
-ভাই মাথা গরম করবেন না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
রাশেদুল কি খায়, কিভাবে ঘুমায়, কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী এগুলার কোনটাই আমার জানার দরকার নেই। দরকার নেই তারও। তারপরেও কেনো সম্পর্কটা এত ভাললাগার মত? কারণ সে জানে আমি কতদুর যেতে পারি আর আমি জানি তার উপরে কতটা নির্ভর করতে পারি।

এখন আসি মুল প্রসঙ্গে। গ্রুপের ভাষাতে বেশকিছুদিন আগে দেখা গেলো খানিকটা শৈথিল্যতা এসেছে। এটা আমার চোখে পড়েছে। ভাল লাগেনি। যিনি লিখছেনে তিনি অবশ্যই আরও সুন্দর এবং মার্জনীয় ভাষাতে লিখতে পারতেন। প্রতিবাদের মুখে ভাষা এডিট করা হলো। আবার দেখা গেলো বেশ আক্রমণাত্বক ভাবে পোষ্ট এসেছে। কথা হলো, যারা এই গ্রুপের পেছনে দিবা রাত্রি খেটে যাচ্ছেন তারা কেউই কৃতজ্ঞতা গ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বসে নেই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস কেউ যদি তানজিয়ার একদিনের শিডিউল শুনে যে অবাক হবে একজন মেয়ে জার্মানীতে বসে তার নিজের পর্বতসম রিসার্চের কাজের পরেও কিভাবে মন্তব্য বা পোষ্ট দেয় এবং গ্রুপ আগলে রাখে।

কোন একদিন আনিসুল আমাকে বললো,
-ভাই এই পোষ্টটা দেন।
তার সাথে খানিকক্ষণ কথা হবার পরেই সে বললো,
-ভাই দশমিনিটের একটা ব্রেক ছিলো। এখন যাই।

দশমিনিটের ব্রেকে জার্মানীতে ঠিকমত খাওয়াও যায়না। আর গ্রুপ রিলেটেড কথাতো বলাই বাহুল্য। তবুও আনিসুল আছে।

আরও রায়হান(সিউল রায়হান এমন নামটা। দুঃখিত ভুল হলে) উনাকে আমি কোনদিন নিরবতা ভাংতে দেখলাম না। অথচ গ্রুপের পেছনে আছেনই। আরও আছেন যাদের নাম আমি মনে করতে পারছিনা।

এই গ্রুপ থেকে সাহায্য নিয়ে কতজন তার স্ত্রী বা বান্ধবীকে এনেছেন তা গণনা করে বের করা সম্ভব না। কতজন আমার মত পাস্পোর্ট রিনিউ এ সাহায্য নিয়েছেন তাও বের করা সম্ভব না। কতজন চোখ রাখছেন কতজন নিরবে সাহায্য নিচ্ছেন এটা হিসাব করে বের করা সম্ভব না। এরজন্যে কেউ বসেও নেই। আমার ধারণা অন্তত আমিই ১০ জনকে দেখেছি যারা বলেছেন,
-এই গ্রুপটা না থাকলে তার আসা হতোনা।

এভাবে সবাই বলবেনা তাহলে আমরা কৃতজ্ঞ জাতি হতাম। কেউ অকৃতজ্ঞ হলে তাতেও আশা করি গ্রুপের কিছু আসে যাবেনা। কেউ যদি এক স্টেপ আগায় বলে টাকা নিয়ে গ্রুপের কেউ কাজ করে তাহলেও বলার কিছুই নাই। সব কিছুর শেষের কথা হলো অকৃতজ্ঞকে বাঘে খায় সবার আগে। প্রমাণ? সে গল্প অন্যদিন।

কেউ কোথায় কি বললো সেটার জন্যে গ্রুপের ভাষাতে অশ্লীলতা আনার বিপক্ষে আমি। একটা মন্তব্যে দেখলাম ‘ভদ্রলোকের সাথে ভদ্র ব্যাবহার, জারজের সাথে জারজের মত’ এটাও মানতে পারলাম না। এরকম হলে কিছুদিন পরে গ্রুপের কোন লেখাই আর পড়ার মত থাকবেনা। প্রায় পঞ্চাশহাজার ছুঁই ছুঁই গ্রুপে কতজন অনুভব করেন একটা ‘বিটে’ বা ‘ধন্যবাদ’ বলা উচিৎ? কতজন ভুলে গেছেন?

এই ভাষাগুলা পরিহার করা উচিৎ। কেউ যদি কোথাও কারও নামে কিছু বলে সেটার জন্যে গ্রুপের ভাষাকে টয়লেটের সাথে মিলিয়ে ফেলার পক্ষে আমি নই। আমি আমার আইডিতে যা খুশি তাই লেখতে পারি অবশ্যই এই গ্রুপে তা প্রযোজ্য হওয়া উচিৎ না।

চাইলে যেমন একজনকে চরম বাজে ভাষায় গালি দিয়ে লেখা যায় আবার চাইলে ভদ্র ভাষাতে কাঁদিয়েও দেয়া যায়। পছন্দ কোনটা করা হবে নির্ভর করে তার উপরে। আশা করি গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা বিষয়গুলা নজরে নেবেন। আবেগ আবেগের জায়গায় থাক; ভাষা থাক হৃদয়ে।

আবারও সবাইকে ধন্যবাদ।

শাহ্‌ ওয়ায়েজ।
ক্রপ সাইন্স ডিপার্ট্মেন্ট।
উনিভার্সিটেট হোহেনহাইম।
স্টুটগার্ট।জার্মানী।

mm

By Shah Waez

International Student Program Moderator bei horads 88,6 - Hochschulradio Stuttgart. Wohnt in Stuttgart.

Leave a Reply