২০১৫ সালের ফেব্রিয়ারি মাসে বই মেলাতে এসেছে বাংলা ভাষায় লেখা রাগিব হাসানের দুইটি বই। বই এর কিছু অংশ আমরা আমাদের এখানে শেয়ার করা হবে আপনাদের পড়ার জন্যে…হয়তো চট করে একটা অংশ পড়া দরকার, হাতের কাছে বইটি নেই তখন ঘুরে যেতে পারেন এখানে…অনলাইন এ বইটি কেনার সুজোগ ও রয়েছে(দেশে এবং বিদেশে)। বইটি কেনার জন্যেও অনুরোধ থাকলো কারণ তা থেকে লেখকের যথাযোগ্য সন্মান দেয়া হয় আর সেই সাথে ছাপানো বই পড়ার আমেজই আলাদা…সর্বপরি এই লেখাগুলো লেখার একটাই উদ্যেশ্য: লেখক চেয়েছেন যাতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা গবেষণা কি এবং কিভাবে করতে হয় তা সহজে শিখতে পারে। সেই উদ্যেশ্যকে সফল করার ইচ্ছা নিয়েই আমাদের এই বিশেষ প্রচেষ্টা।লেখক এবং প্রকাশক উভয়কে আমাদের ধন্যবাদ এই পোস্টগুলো শেয়ার দেয়ার অনুমতি দেয়ার জন্যে।
রাগিব হাসান
প্রেজেন্টেশন। আপনি পড়াশোনাই করেন, অথবা গবেষণা, কিংবা চাকুরি/ব্যবসা — কোনো না কোনো সময়ে এক রুম ভর্তি লোকজনের সামনে আপনাকে দিতেই হবে প্রেজেন্টেশন, উপস্থাপন করতে হবে একটি বিষয়কে।
ভালো প্রেজেন্টেশন দেয়ার হাজারটা টিপ্স আছে, কিন্তু প্রেজেন্টেশন জঘন্য হয় কেনো, তা বরং জেনে নিন। প্রখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী ডেভিড প্যাটারসন এর একটা বিখ্যাত লেকচার আছে — কীভাবে বাজে লেকচার/প্রেজেন্টেশন দিতে হয় (How to give a bad talk?)
আসুন, দেখে নেই, প্যাটারসনের মতে বাজে লেকচার বা প্রেজেন্টেশনের বৈশিষ্ট্য কী হয় —
১) হিজিবিজি, বানান/ব্যকরণ ভুল — বাজে ভাবে স্লাইড বানানো, বানান বা ব্যকরণের দিকে খেয়াল না রাখা।
২) ঠেঁসে ভরে দেয়া — প্রতি স্লাইডে কোনো জায়গা নষ্ট না করে ঠেঁসে লেখা ভরা, দরকার হলে একগাদা লেখা দিয়ে, চকরাবকরা ছবিতে।
৩) রচনা লেখা — স্লাইডে সংক্ষেপে কথাগুলা না লিখে বিশাল রচনা লেখা। স্কুলের কথা মনে আছে তো, হু হু, বাংলা রচনায় যত বেশি লেখা তত বেশি নম্বর, তাই লিখেন রচনা মনের সুখে, বিশাল প্যারাগ্রাফ কপিপেস্ট করে দেন স্লাইডে। দর্শকেরই তো ঠেকা, তাই না?
৪) ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ফণ্টে লেখা — ভাবখানা এমন যেন সবাই আঁতশ কাঁচ নিয়ে দেখতে এসেছে। কেউ পড়তে পারে কিনা মাথা ঘামিয়ে লাভ কী!!
৫) সাদা-কালো — সব লেখা কালো, সব ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা, সব ফন্ট সমান, কোনো কিছুকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য রঙ বা বোল্ড না করা।
৬) ছবিটবির দরকার কী? — কথার পর কথা দিয়ে স্লাইড ভরানো, একশো একটা বুলেট পয়েন্ট মারা, কিন্তু কোনো ছবি না দেয়া।
৭) চোখে চোখে না তাকানো — পুরাটা লেকচার স্ক্রিনের দিকে অথবা কড়ি কাঠের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেয়া। (বাংলাদেশে আমাদের সব সময়ে চোখে চোখে কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়, অথচ এইটার মাধ্যমে যে কতটা নার্ভাস মনে হয় বক্তাকে, তা যদি কেউ বুঝতো!!)
৮) হাজার হাজার স্লাইড — ২০ মিনিট সময় তো কী হয়েছে, ৪০টা স্লাইড দেয়া, প্রতি স্লাইড ঝড়ের বেগে পড়ে যাওয়া, এবং সময়ে না কুলালেও বিনা স্লাইডে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনী টাইপের মন্ত্র পড়ে সবগুলা স্লাইড দেখাতে চাওয়া!
৯) অনুশীলন? — প্রাকটিস করে কোন বোকায়? আপনার আত্মবিশ্বাস কি এতোই কম নাকি? মনে মনে অনুশীলন করলেই চলে, লেকচারের সময়ে ফাটিয়ে ফেলবেন। তাই না?
এখন ঠিক করে নিন। আপনার মাঝে কি উপরের ৯টি বৈশিষ্ট্যের কোনটা আছে? এগুলার কোনো একটাও মেনে চললে আপনার লেকচার বা প্রেজেন্টেশন জঘন্য হতে বাধ্য। সে পড়াশোনা/গবেষণা, কিংবা বিজনেস প্রেজেন্টেশন, যাই হোক না কেনো। তাই সময় থাকতে এগুলাকে এড়িয়ে চলা অভ্যাস করুন।
বাজে লেকচার দেয়ার জন্য ব্যঙ্গ করে লেখা প্যাটারসনের বিস্তারিত ১০টি পয়েন্ট দেখতে পাবেন এখানে — http://www.cs.berkeley.edu/~pattrsn/talks/BadTalk.pdf
—
বই এর প্রকাশকের পেজটি দেখতে করতে ক্লিক করুন আর ফেইসবুক পেজ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন এবং দ্বিতীয় লিংক
[…] গবেষণা : জঘন্য প্রেজেন্টেশন বা লেকচার … […]
[…] গবেষণা : জঘন্য প্রেজেন্টেশন বা লেকচার … […]