এই ২টা কনফেশন এইখানে শেয়ার করার উদ্দেশ্য- টুম-এ পড়া শুরুর পর থেকে আমি যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি ফেস করছি- “আমি কি চান্স পাবো?!!” “ভাই, কেমনে সম্ভব?!!!” “ভাইরে ভাই, যে র‍্যাঙ্কিং!!”

সত্যি বলতে কি- র‍্যাঙ্কিং জিনিসটা শুধুমাত্র ডেনমার্কে পিআর পাওয়া আর হুদাই হম্বিতম্বি দেখানোর জন্যে উছিলা ছাড়া বোধ হয় আর কিছুতেই কাজে আসেনা। আমি টুমে, আখেনে বা সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখে পড়লাম- যারা বিখ্যাত তাদের গবেষণার জন্যে- তো সেই গবেষণাপত্রগুলার বেশিরভাগই জার্মান (এই ভাষাগত কারণেই ইন্টারন্যাশনাল র‍্যাঙ্কিং-এ জার্মান, ডাচ, সুইস ভার্সিটিগুলা পিছায়ে থাকে) – এখন আমি যদি সেই গবেষণাগারগুলাতে কাজই করতে না পারলাম বা গবেষণাপত্রগুলা পড়ে নিজের ভিতরে কিছু ঢুকাইতেই না পারলাম তাইলে আর সেই র‍্যাঙ্ক কি কাজে আসলো?

আমার মতে – স্ট্যান্ডার্ড যে কোনো ভার্সিটিই, এমনি এম্নিতো আর গভমেন্ট এপ্রুভাল পায়না- গবেষনা অল্পবিস্তর সবারই কিছু না কিছু ক্ষেত্রে স্পেশালটি আছে। আবার এমনও হয়- অনেক ভার্সিটি (যেমন হাইডেলবার্গ ইউনি) আগে অনেক রথী মহারথীর মিলনস্থল হলেও এখন স্টেট গভমেন্টের অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে হয়তো গবেষণায় কম টাকা বিনিয়োগ করে- তবে যা দেয় সেটাই টপক্লাস! তো আপনি র‍্যঙ্কে উপরের দিকের ভার্সিটিতে চান্স পেলেননা বলে হতাশ? – এই ফালতু হতাশা ঝেরে ফেলে বরং আপনার ভার্সিটিতেই কোনো একটা গবেষণার কাজে “হিউভি” যোগাড় করতে পারেন কিনা সেদিকে মনোযোগ দিন। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো অন্য অড জবের তুলনায় হিউভিতে এফোর্ট অনেক বেশি দিয়েও কম টাকা পাবেন- কিন্তু অড জবের এক্সপেরিয়েন্স সিভিতে লিখতে পারবেনা, অন্যদিকে পড়ালেখা শেষে ঐ ভার্সিটিতে কি পড়লেন না পড়লেন তার তুলনায় হিউভি’র এক্সপেরিয়েন্সের দিকে তাকালেই দেখবেন সেটা অনেক বেশি কিছু দিয়েছে আপনাকে। মনে রাখবেন – ভার্সিটির মাস্টার্স-এ পড়া কোর্সগুলা আপনাকে কিছু ব্যাপারে থিওরিটিক্যাল জ্ঞান পোক্ত করবে, কিন্তু একটা হিউভিতে করা কাজ আপনাকে সেই কাজে এক্সপার্ট বানাবে।

ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট লিংক

এখন কথা হলো- হিউভি পাবেন কি করে? সহজ কয়েকটা স্টেপ বলি-
১- ভার্সিটির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টগুলার আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট থাকে, সেখানে সপ্তাহে এটলিস্ট ১ বার নজর দিন।

২- আপনার ডিপার্টমেন্টের কোনো একজন প্রফেসর (জুনিয়র টাইপ প্রফেসর অথবা মিট-আরবাইটার হইলে কথা বলার চান্স পাবেন, সিনিয়র প্রফেসরদের মুখ দেখাও ঈদের চাঁদ দেখার মত- বছরে ২-১বার) -এর সাথে পড়া বা তাঁর কোনো একটা কাজ নিয়া আলাপ জমান (বিশ্বাস করেন- নিজের কাজ নিয়ে অন্যের আগ্রহের কথা শুনতে যে কারোই ভালো লাগে – তবে সেটা আগ্রহ লেভেলেই যাতে থাকে, ফালতু “ফ্ল্যাটারিং” যাতে না হয়), অতঃপর “ঊইশ আই কুড ওয়ার্ক ইন দিজ ফিল্ড!” অথবা “ইফ ইউ হ্যাভ অপরচুনিটি ফর গ্র্যড স্টুডেন্টস ইন দিজ টপিক, প্লিজ লেট মি নৌ” এই জাতীয় একটা হাল্কা চালের বাড়ি মারতে পারেন। [বিঃদ্রঃ কি এপ্রোচে কথা বলবেন সেটা আপনার সাথে তার রিলেশনের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল – হুযূর হুযূরও করবেন না বা “আয় মাম্মা” জাতীয় কথাও কইবেন্না। আমার কথা বিশ্বাস করেন (আমার ক্লোজ বিদেশি বন্ধুদের কাছ থেকে এ ব্যাপারটা নিয়ে শুনেছি)- আমাদের উপমহাদেশের লোকদের একটা কুখ্যাতি- আমরা একধরণের দাস মেন্টালিটি নিয়ে এপ্রোচ করি- প্লিজ রিমেম্বার দ্যাট!! ]

৩- ধরেন, যে ডিপার্টমেন্টে পড়ছেন সেখানে আপনার ইন্টারেস্টে কেউ কাজ করেনা বা যারা করে তাদের সাথে রিলেশন তেমন নাই, তাইলে অন্য যে ডিপার্টমেন্টে- যেখানে হয়তো আপনি কোনো কোর্স করেন, সেখানে এই বাড়িটা দিতে পারেন। হওয়ার সম্ভাবনা আছে বেশ ভালোই (আমার ক্ষেত্রে হইছিলো।)

৪- সর্বোপরি, আপনি ভবিষ্যতে যে বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান (বিশেষত পিএইচডি) – সে ফিল্ডে কারা কারা কাজ করে সেটা আপডেটেড থাকুন। এই ব্যাপারটা গুগলিং করে জানতে পারেন। তবে সবচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র হলো- বিভিন্ন সময়ে কোর্সগুলো পড়তে গিয়ে/ প্রেজেন্টেশান বা রিপোর্ট বানাতে গিয়ে/ থিসিস করতে গিয়ে – যে পেপারগুলো পড়ছেন, সেখানের অথরদের নামটা টুকে নিয়ে গুগলিং করুন। বেশিরভাগ সময়েই আমি নিশ্চিত পেপারটা পড়তে গিয়ে আপনি সময় পাবেননা এটা করার (খুব স্বাভাবিক, আমিও পেতামনা :P)। কিন্তু পেপারটা পড়া শেষে অথরের নাম, মেইল এড্রেসটা একটা ডক ফাইলে সেভ করে রাখুন। একেক দেশের প্রফেসরদের জন্যে একেক্টা ফোলডার তৈরী করুন। পরে পিএইচডি খুঁজতে গেলে অনেক বেশি টাইম সেইভ হবে। এমনকি থিসিস করতে গেলেও ততদিনে বুঝে যাবেন- কোন ফিল্ডটা আগামীতে মার্কেট দখল করবে এবং কোন ফিল্ডে কাজ হয় বেশি- ফলে থিসিস টপিক সিলেকশনেও আপনার ডিসিশন অনেক সহজ হয়ে যাবে। (আইডিয়া ক্রেডিট – Dhrubo ভাই)

https://www.facebook.com/TUMConfessions/posts/134307466764663
(ট্রান্সলেশন- I use the ” TUM ” status everywhere to come over smart although I have no idea what I am studying at all.”)

https://www.facebook.com/TUMConfessions/posts/134524733409603
(এইটা আমার ক্ষেত্রে পার্শিয়ালি সত্য, আমি যে বিষয়ে ইন্টারেস্টেড সেই ফিল্ডে টুম-এ কোনো জাতের কামই হয়না! frown emoticon কিন্তু ইটিএইচ-এ প্রচুর কাজ হয়।)

Ranking of German universities

CHE University Ranking examines over 30 popular subjects at German universities. You can also compile a league table based on your own personal criteria!

At present the CHE UniversityRanking on the DAAD website is being reorganised. Please consult the version on the website of the German weekly newspaper DIE ZEIT under http://ranking.zeit.de/che2015/en/ (free of charge, registration necessary).

mm

By Jamal Uddin Adnan

Studied Advanced Construction & Building Technology - Automaton, Robotics, Services at Technical University of Munich. Lived in Munich, Germany. From Chittagong.

4 thoughts on “ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং(Ranking) এর চেয়েও যা গুরুত্বপূর্ণ!”

Leave a Reply