ভাষার জন্মকথা যদি ভাষা বিভ্রাটে না থাকে তাহলে বেশ অন্যায় হয়। তবে বিরক্তিকর ভাষাতত্ত্ব কপচাবো না। এই যেমন ধরুন বাংলা ভাষা এসেছে সংস্কৃত নাকি বৈদিক ভাষা থেকে এটা নিয়ে আমি প্রশ্ন না করে সরাসরি সূত্রটাই লিখে দিচ্ছি:
ইন্দো-ইউরোপিয়ান(৩৫০০-২৫০০ খ্রিঃ পূঃ) > আর্য > প্রাকৃত > অপভ্রংশ > বাংলা (১২০০ খ্রিঃ থেকে বর্তমান), (কৃতজ্ঞতা: ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়)
যেমন: ”তুমি ঘোড়া দ্যাখো”, এই বাক্যকে ২৫০০ খ্রিঃ পূঃ তে ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষায় বলা হত, “য়ুস এক্কোম্ স্পেকি্এথে”! অত্যাশ্চর্যজনক!
ধারণা করা হয়, ২৫ লক্ষ বছর পূর্বে মানুষের আদি পিতা হোমো হাবিলাসদের মাধ্যমে ভাষার আবির্ভাব ঘটে। প্রশ্ন আসতে পারে, কীভাবে এটা জানা সম্ভব? আরে বাবা, জ্বিন(!) আছে না। ওহ, সরি! জিন, মানে জেনেটিক এলগরিদমের জিন! ফর্কহেড বক্স প্রোটিন পি২ (FOXP2) এমন একটি প্রোটিন, যা এনকোডেড CAGH44 জিন দ্বারা, আর এটি মানুষের কথাবার্তা বা ভাষার সক্ষমতার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। বিবর্তনের পথ ধরে, লক্ষ কোটি বছরের সাধনায় পাওয়া আমাদের এই গুণ। ব্যাপারটা যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক বৈকি।
ভাষা নিয়ে এরকম মজার তথ্য দিয়ে শেষ করা যাবে না। যেমন: আমরা জানি, পদ গঠিত হয় কতগুলো পদাংশ(Syllable) দিয়ে। মজার ব্যাপার হল, সকল ভাষার পদাংশ(Syllable) প্রতি ‘তথ্য ঘনত্ব'(Information Density) একই নয়। এখন ধরুন, ১ মিনিট কাউকে কথা বলতে দেয়া হল। কিন্তু দুটি ভিন্ন ভাষায়। ১ মিনিট শেষে তাঁরা একই কথা বলবে, কিন্তু যে ভাষার তথ্য ঘনত্ব কম, তাকে বেশি পদাংশ ব্যবহার করতে হবে। ফলে ১ মিনিটের মাঝে কথা শেষ করতে হলে তাকে অপেক্ষাকৃত দ্রুত কথা বলতে হবে। তাই স্প্যানিশ বা জাপানিজ ভাষা আমাদের কানে বেশ দ্রুত শোনায়, সেই তুলনায় চাইনিজ ভাষা বেশ ধীর গতিসম্পন্ন।
শেষ করার আগে আরেকটু। বর্তমান ৬৫০০ ধরণের ভাষার মাঝে মাত্র অর্ধেক ভাষা বেঁচে থাকবে এই শতাব্দী শেষে। অর্থাৎ প্রতি ২ সপ্তাহে একটি ভাষার মৃত্যু ঘটছে। কেনইবা হবে না! ৯৬% বিভিন্ন ধরণের ভাষা বলে মাত্র ০৪% মানুষ। সৌভাগ্যক্রমে আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি। এই ভাষার হয়ত মৃত্যু হবে না এই শতাব্দীতে। তবে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের এই বহতা নদীতে বাংলা ভাষার রূপান্তর হবে তা বলাই বাহুল্য। ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের লেখা কবিতাটি দিয়ে শেষ করলাম:-
“ইংলিশ ভেরি ফ্যান্টাসটিক / হিন্দি সুইট সায়েন্টিফিক
বেঙ্গলি ইজ গ্ল্যামারলেস, ওর ‘প্লেস’ এদের পাশে না
জানেন দাদা, আমার ছেলের, বাংলাটা ঠিক আসে না।”
সবাইকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অগ্রিম শুভেচ্ছা।
ম্যাগাজিন ডাউনলোড/দেখতে ক্লিক করুন (প্রায় 12.50 মেগাবাইট)
আশা করি, আমাদের এই পরিবেশনা আপনারা বরাবরের মত ভালবাসবেন। গত ২ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন প্রকাশনা আপনাদের ভালবাসার জন্যই সম্ভব হয়েছে। আপনারাই আমাদের ম্যাগাজিনের প্রাণ! তাই যেকোন মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
ম্যাগাজিন ডাউনলোড/দেখতে ক্লিক করুন (প্রায় 12.50 মেগাবাইট)
টিম জার্মান প্রবাসে
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
০২ ফাল্গুন ১৪২২
অনিচ্ছাকৃত বানানভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আবেদন রইল।
চাইলে আপনিও লেখা/ছবি পাঠাতে পারেন!
লেখা আহ্বান: মার্চ মাসের জার্মান প্রবাসে ম্যাগাজিনের জন্য লিখুন- বিষয়ঃ “নারী দিবস”
ভ্যতার গোড়া হতে আজ পর্যন্ত পৃথিবী পরিশীলতা লাভ করেছে যাদের কারনে নারীর ভূমিকা তাতে আধাআধি। পুরুষের হাতে হাত রেখেই নারীরা ইতিহাসের পাতা স্বর্ণালী করে তুলতে রেখেছে অবিস্মরণীয় ভূমিকা। আদিকালের সেই ‘বাঙালি নারী কুড়িতে বুড়ি’ এ আর প্রাসঙ্গিক নয় একালে। গত প্রায় সিকি শতাব্দী ধরে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে নারী।
বিজ্ঞান তথ্যপ্রযুক্তিসহ উন্নয়নের সকল স্তরে নারীর এখন সম্মানজনক অবস্থান। একটা সময় বাংলাদেশের মেয়েরা দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য আসতে বাধাগ্রস্থ হতো পরিবার থেকেই। কারন একা মেয়ে কি করে বিদেশে থাকবে, তাই বিয়ের পরই কেবল বিদেশে আসার উপায় মেলতো।
পরিস্থিতি পাল্টেছে। বাংলার নারীরা পৃথিবীর নানা প্রান্তের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জটিল সব বিষয়ে পড়ালেখা করে নজরকাড়া ভূমিকা রেখে চলেছেন। পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে চলে এরাই বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি প্রগতিশীল আধুনিক বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত করে তুলছে। তবু সামাজিক পারিবারিক নানা সমস্যা এখনও বর্তমান। এসব বাধা পেরিয়ে যে মেয়েরা ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীব্যাপী আমরা শুনতে চাই তাদের এই চিরকালীন বাধা পেড়োনোর কথা।
এছাড়া মার্চ সংখ্যা থেকে আমরা নতুন একটি বিভাগ চালু করছি যেখানে জার্মানিতে আসতে ইচ্ছুকদের জন্য থাকবে প্রয়োজনীয় তথ্য। আপনি/আপনারা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিষয়ে পড়ছেন সেখানে ভর্তির উপায়, যোগ্যতা ইত্যাদি তথ্যসহকারে প্রয়োজনীয় লিংক দিয়ে ছোটখাট লেখা পাঠাতে পারেন। এতে করে দালাল/এজেন্সী ছাড়াই উচ্চশিক্ষার জন্য উপকৃত হবে আমাদের শিক্ষার্থীরা।
লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে নিচের ঠিকানায়ঃ
ডেডলাইনঃ ২৮ শে ফেব্রুয়ারী ২০১৬
লেখা পাঠানঃ [email protected]
অথবা পেজের ইনবক্সে পাঠানঃ www.facebook.com/pages/জার্মান-প্রবাসে/212610425614429
ছবির পাঠানোর জন্য বিস্তারিতঃ http://goo.gl/90IVlk
লেখার সাথে নাম ঠিকানা পেশা আর একটি ছবি অবশ্যই পাঠাবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ শুধু জার্মানি বা বাংলাদেশ থেকেই নয়, যেকোন দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাদর আমন্ত্রণ আমাদের ম্যাগাজিনে! তাই আমাদের ম্যাগাজিনে লিখতে হলে আপনাকে বাংলাদেশ বা জার্মানিতেই থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই!
জার্মান প্রবাসে আড্ডা দিতে চাইলেঃ www.facebook.com/groups/BSAAG/(বিশ্বস্ততার সাথে ৫২,০০০+ সদস্য নিয়ে)
——————————————————————–
অনলাইনে পড়তে চাইলেঃ https://goo.gl/2LKB7P