DAAD স্কলারশিপের রেজাল্ট বের হওয়ার পর জর্জ-অগাস্ট-ইউনিভার্সিটি থেকে ই-মেইল আসল গত বছর মার্চ মাসে। এবার প্রস্তুতির পালা।

জার্মান সংস্থা জিআইজেড এ চাকরী করতাম, নিয়মানুযায়ী তাদের জানালাম এপ্রিল মাসে। পাসপোর্ট আগেই ছিল কিন্তু মেয়াদ ছিল ২০১৬ এর এপ্রিল পর্যন্ত। নতুন দেশে গিয়ে আবার কোন ঝামেলায় পড়ি সেই চিন্তায় দেশে থেকেই পাসপোর্ট নবায়ন করলাম (মেয়াদ হলো ২০২১ সাল পর্যন্ত)। এবার ভিসা প্রসেসিং এর পালা। জার্মান এম্বেসিতে ফোন দিলাম, তারা বললো যদিও ২-৩ মাস আগে এপ্লাই করা উচিত কিন্তু DAAD স্কলারশিপ পাওয়ার কারনে ১.৫ মাস আগে ভিসার এপয়েন্টমেন্ট নিলেও চলবে।

তাদের কথা মতোই এপয়েন্টমেন্ট নিলাম। ওয়েবসাইট দেখে SSC, HSC, Hon’s এর সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন, IELTS এর সার্টিফিকেট (যদিও সেটা ২.৫ বছর আগে দেয়া), পাসপোর্ট, DAAD এর সব কাগজপত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশনের কাগজ, জন্ম-সনদ – সব কিছুরই আসল কপি আর ৩ কপি করে ফটোকপি নিলাম সাথে। এম্বেসির গেটে ঢুকতেই ব্যাগ, মোবাইল সবই রেখে শুধু ডকুমেন্ট নিয়ে ঢুকতে বলল, সাথে বলে দিল “আপনার সময় ৫ মিনিট, সব কাগজ সিরিয়ালি গুছিয়ে রেডি হন”। ভেতরে গিয়ে দেখি SSC, HSC সবকিছুর রেজিস্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশপত্র এইসবও দিতে হবে সাথে! আমার সাথে ওইসবের কিছুই নাই, ওয়েবসাইটে না লিখে এইখানে দেখানোর হেতু আমার ছোট মাথায় আসলো না। কিসের ৫ মিনিট, যে সিরিয়াল দেখলাম কারোর পক্ষেই মনে হয়না প্রথমবার ৫ মিনিটে ৩ সেট ডকুমেন্ট সাজানো সম্ভব, তার উপরে আমার কাছে সব ডকুমেন্ট নাই!

german_visa_for_expats

যাই হোক মাথা ঘুরছে তখন, একবার ভাবি ভিসা অলরেডি শহীদ হয়ে গেছে (কাগজ তো নাই সব!) যাই হোক সিরিয়াল আসার পর ভিতরে গেলাম। ভদ্রলোক কাগজপত্র দেখে জিজ্ঞেস করলেন “দেশে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরতেন? জার্মানীতে কোথায় পড়বেন?” হেতু কিছুই বুঝলাম না, কাগজতো দিলামই; যাই হোক নিজের মুখে বললাম। DAAD এর কাগজ দেখার পর ভদ্রলোকের ভদ্রতা মনে হলে একটু বেড়ে গেলো! IELTS এর কাগজে মেয়াদ দেখে কি যেন ভাবলো, বলল ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই। GIZ এর যে চাকরী করি তার সার্টিফিকেট চাইলো বললাম সাথে নাই। যাই হোক, ই-মেইল আর ফোন নম্বর দিয়ে চলে এলাম। ভদ্রলোক বললেন ১৫ দিনের মধ্যেই হয়তো আমাকে জানানো হবে।

তখন সামনে রোজার ঈদ, রোজা রেখে এমনিতেই কাহিল অবস্থা এরমধ্যে বাসায় যাওয়ার টিকেটও করে ফেলছি। এম্বেসির কথামতোই টিকেট কাটা ছিল কিন্তু অবস্থা ছিল টান-টান! ১৫ দিনের মধ্যে জানানোর কথা ছিলো তাই টিকেট কাটা ছিল এপয়েন্টমেন্টের দিন থেকে ১৬ দিন পরে। প্লেনের টিকেট কাটা ছিল ৩১জুলাই আর ঈদ ছিল (সম্ভবত ২০ জুলাই এর দিক এ)। ঈদের পর আবার ঢাকায় এসে ভিসা নিতে গেলে সময় নিয়ে আবার টানাটানি পরে যাবে; যেহেতু ঢাকায় আমার কোন আত্মীয় থাকেনা!

যাই হোক মজার একটা কাজ করলাম ১৫তম দিনে। এম্বেসির ওয়েবসাইটের ই-মেইল এড্রেসে লিখললাম “DAAD asked me if everything is OK for my VISA processing. According to my interview, I was supposed to be informed within 15 days. Can you please suggest me what should I reply to DAAD at this moment?”  ই-মেইল পাঠানোর ৩ ঘন্টা পর এম্বেসি থেকে ফোন আসলো “your passport is ready to be collected”. গিয়ে দেখলাম পাসপোর্টে ভিসার সিল! শান্তি এইবার শান্তিতে কাল বাড়ি যাব!

mm

By Saleh Md Musa

BSc. & MSc. from Forestry (KU-BD) Worked with GIZ for 2 years MSc. student in Georg-August-Universität, Göttingen.

2 thoughts on “জার্মানি আসার গল্প (ভিসা প্রসেসিং পর্ব)”
  1. ঢাকায় আপনার কোন আত্মিয় নাই তো এই ছোট ভাই আইল কোথা থেকে, ছিঃ মুসা ভাই…..

    যাই হোক পুরনো গল্পের চাক্ষুষ সাক্ষী কিন্তু আমি। ভাল থাকবেন সে যেখানে ই থাকুন।

Leave a Reply