কই থেকে শুরু করবো বুঝতেছি না।২০১৬ এর জানুয়ারিতে যখন জিপির জব এর মেয়াদ শেষ হয় তখনি ডিসিশন নেই আই এল টিস দিবো। কিন্তু ভাগ্য খুলেনি এমন স্কোর পাই যা দেখে নিজেই অবাক হই কেননা আমার পড়াশুনা সব কিছুই ইংরেজিতে ছিল স্কুল কলেজ। তাই আবার সাথে নতুন ডেট নেই।এবারো আহামরি কিছুই পাইনি। কিন্তু এপ্লাই করার মতো পুঁজি পেয়ে যাই। মোটিভেশন লেটার লেখার মত এবিলিটি আমার কমই ছিল।কিন্তু জিএফের প্যারাই পরে আর তার অবিরাম পরিশ্রমে দুইজন মিলে রেডি করে ফেলি।
এপ্লাই করলাম TUM এর Transportation System, Environment , ড্রেসডন এর ACCESS ,HSE ,ভাইমার NHRE, BTU COTTBUS ENVIRONMENT MANAGEMENT। এপ্লাই করার সময় একটা ক্রেডিট কাড’ এর অভাব এত ভোগ করছি যা বলার মত না। ইউনি এসিস্ট এর ফি পে করার জন্য স্পেসালি। খুব কাছের বন্ধুদের কাছে চাইছি কিন্তু এমন সব যুক্তি দিয়ে ডিনায় করছে এগুলা মনে হলে মনটা খারশে াপ হয়ে যায় এখনো। চলে যাই ব্রাক ব্যাংক এ বনানি শাখায় কাজ হয়ে যায় কিন্তু চিপায় পড়ে ৪হাজার টাকা চলে যায় অদ্ভুত সব ফি।
এর মাঝে নাভানার জবের ফাইনাল ভাইবায় আর যাই নি।। সব এপ্লাই শেষ করে আবার জবে ঢুকে যাই। আপনারা যারা বনানির রাস্তায় গত ৬ মাস একবার হলেও গেছেন ইচ্ছামত গালি দিছেন রাস্তার কাজের জন্য।।এই কথা এই কারনেই বললাম আমি এই কাজের একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে ছিলাম। অনেক কষ্ট দিয়েছি তার জন্য সরি। সিটি ব্যাংকে ঢুক তেও আপনাদের অনেকের কষ্ট হয়েছে ড্রেন কাটার জন্য। এপ্লাই এর পরে অপেক্ষা আর অপেক্ষা।একদিন মেসে রান্না হয়নি শখ করে চাইনিজ খেতে যাই সন্ধায়।।প্রথম মেইল টাম থেকে ট্রান্সপোর্ট এর রিজেক্ট।। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো।কেননা আমার থিসিস ছিল এইটায়। পাব্লিকেসন ছিল কিন্তু কি আর করা আর অপেক্ষা। এক সপ্তাহ পরে আমার টাম এর এনভায়রনমেন্ট এ রিজেক্ট। জুনের ১৩তারিখ ড্রেসডেন থেকে এক্সেস থেকে আবার রিজেক্ট। মনটা পুরোপুরি ভেঙে গেছে।।
অফিসে বসে আছি ওইদিন।হূট করে রাশিয়া থেকে জিএফ ফোন করে বলে “ইমন চেক ইউর মেইল”। হ্যা এইবার ভাইমারে NHRE থেকে পজিটিভ।সাথে সাথে জব থেকে রিজাইন দেই। ড্রেসডেনের মাহবুব ভাই আমার কলেজের বড় ভাইয়ের মাধ্যমে পরিচয় হয় ভাইমারের এক বড় ভাইয়ের সাথে। বাকি সময় গুলি তাকে যে কি পরিমান পেইন দিছি শুধু আমি জানি। এর মাঝে শুরু হয় ব্যাংক আর এম্বাসির নাটক।ভাইয়া ছিল সব সময় পজিটিভ। আমার জন্য ভাইয়া স্পার্কিসি ব্যাংকগুলিতে কতবার যে গেছে আমি তা বলে লজ্জা পেতে চাই না। সাহস করে ডিবিতে টাকা পাঠিয়ে দেই। ৩০জুন অফিস থেকে বিদায় নেই এর মাঝে। তারপর আবার ভাইয়াকে আর জিএফকে পেইন দেয়া শুরু করি এম্বাসি ফেস করার টেনশনে।
অবশেষে ২ আগস্ট এম্বাসি ফেস করি।কিছুই তেমন জিজ্ঞাসা করেনি। সব শেষ করে বাসায় চলে আসি জামালপুর। এর মাঝেই বলে বসে ব্লক একাউন্টে এক্সট্রা টাকা পাঠাতে হবে ৬০০ইউরো। মনটা খারাপ করে পাঠিয়ে দেই।এর মাঝে একে একে Dresden Hydro Science, BTU Cottbus থেকে অফার চলে আসে। সব মিলিয়ে ৩ টায় অফার পেয়ে কনফিউজড হয়ে যাই ড্রেসডন নাকি ভাইমার?ড্রেসডেন এর র্যাংকিং এর লোভ লাগে সব সময় কিন্তু ভাইমারের সাবজেক্ট আর ভাইয়ার মত একজন মানুষকে পাবো এটা ভেবে আর পেছনে ফিরে তাকাইনি। একে একে ৪৭টি দিন ঘুমহীন রাত কাটাইছি আর জিএফকে পেইন দিছি আর ভাইয়া তো ফ্রি।।প্রতিদিন অদভুত সব প্রশ্ন করতাম ভাইয়াকে সে সব সময় পজিটিভ ছিল বলতো হবে। কিন্তু আমার মনে ভয় ছিল এর কারন ছিল অনেক। আমার আই এল টিস কম সব মিলিয়ে এত এত ভয় এত যন্ত্রণা। মাঝে একের পর এক জব ভাইবা অফার ডিনাই। আমার জব লাক খুবি ভালো। ২০১৪ এর নভেম্বরে পাস করার পর একদিনও বেকার থাকিনি।
অবশেষে সব অপেক্ষার পালা শেষ করে ৪৭ দিন পর ভিসা পেয়ে যাই গত ১৮তারিখ মনে হয় সপ্নটা যেন হাতে পেয়ে গেছি। অনেক অনেক অপেক্ষা করেছি এই দিনটির জন্য। সবচেয়ে মজার কথা আমার ভিসা হবার আগেই আমাদের এথেন্স যাবার এয়ার টিকেট কাটা হয়ে গেছে ঘুরার। তো ডয়েচল্যান্ড আই এম কামিং টু সি ইউ!
বি:দ্র- আমি এমন একজন মানুষ যে কিনা বাংলাদেশের ৫৯ টি ড্রিস্ট্রিক্ট ঘুরে বেড়িয়েছি। তাই এই পরিবারের সবাইকে সব স্টেট এর ভাই ব্রাদারকে একবার হলেও জালাতে আসছি।
apnar ielts score koto silo?