বিদেশ জীবনের প্রথম তিনটি বছর ব্রেমেনএ পার করেছি। সেই ২০০৯ সালের উইন্টার সেমিস্টার এ আসছিলাম, তারপর কেটে গেছে কয়েকটা বছর সেই প্রিয় শহরে। প্রবাস জীবনের প্রথম কয়েকটা বছর ব্রেমেন এ ছিলাম তাই ব্রেমেন এর প্রতি টানটা সবসময় একটু বেশি। অনেক বছর হলো ব্রেমেন ছেড়েছি তারপরও, ব্রেমেন এর প্রতি একটা অন্যরকম আবেগ কাজ করে সবসময়, আর এই আবেগের টানেই এখনো মাঝে মাঝে চলে যাই সেই প্রবাস জীবনের প্রথম শহর ব্রেমেনে। সেই সুবাধেই অনেক নতুন ভাইদের সাথেও অনেক আন্তরিকতা, আমি থাকাকালীন যারা ছিল তাদের কেউই এখন আর ওই শহরে নাই, তারপরও কখনো সেইটা অনুভব করতে পারিনা, আর সেটার একমাত্র কারণ কাছের কিছু ছোট ভাইদের ভালোবাসার জন্য।
গত কয়েকদিন ধরে ফেইসবুক এর নিউজ পোর্টাল এ ঢুকলেই একটা কষ্ট অনুভব করি, যদিও সুজন এর সাথে সরাসরি দেখা বা পরিচয় আমার হয় নাই, তারপরও কষ্টটা এমন ছিল, মনে হচ্ছিলো আমার ছোট একটা ভাই আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়ে গেছে। অনেকবার তার ফেইসবুক একাউন্ট এ ঢুকেছি, যতবারই তার প্রোফাইল এ গেছি, সবার প্রথমেই অ্যাড অপশন টা চোখে পরে, মাউস টা ওইখানে গেলেই বুকের ভিতর কেমন জানি করে উঠে, আর ভাবি আমার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট টা তো আর কোনোদিন একসেপ্ট হবে না, তখন আর তার প্রোফাইল এ থাকতে পারিনা।
শত কষ্ট নিয়েও মনের মাঝে শান্তনা পাই, সুজনের নিথর দেহ টা তো তার মায়ের বুকে পৌঁছাচ্ছে। ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবোনা কাউকে, তোমরা যা করেছো তোমাদের স্যালুট, স্যালুট Bangladeshi Student and Alumni Association in Germany, তাদের জন্যই এতো বড় একটা কাজ সফল হয়েছে।
প্রবাস জীবন অনেক কষ্ট, অনেক একাকিত্ব অনেক নিঃস্বঙ্গ। কিন্তু আজ এইটা প্রমাণিত হল আমরা এখানে কেউই একা নই, হাজার হাজার ভাইবোন আছে আমাদের। সবার জন্য দোয়া করি যেন সুজনএর মতো অন্য কাউকে লাশ হয়ে দেশে ফিরতে না হয়, আর যদি কপালের লিখন আমরা বদলাতে নাই পারি, বিদেশএর মাটিতে কাউকে দাফন করতে দিবনা, চিতায় পুড়তে দিবনা কোনো সুজন কে।
সুজন তুমি যেখানেই থাকো ভালো থাকো !!!!!!!!
[…] ভালো থাকো সুজন !!! […]
[…] ভালো থাকো সুজন !!! […]