আমার উচ্চশিক্ষার জার্নি টা হঠাৎ করেই শুরু। অনার্সে থাকাকালীন বরাবরই ক্লাসের নিম্ন সিজিপিএ ধারীদের একজন ছিলাম, উচ্চশিক্ষার কোন প্ল্যান ও ছিল না কখনও। সেই কারনেই বোধ হয় গ্রাজুয়েশান শেষ করার পর যখন দেশের বাইরে মাস্টার্স করার সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজের মাঝেই এক ধরনের ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্স কাজ করছিল। তার উপর ছিল, পরিবারের প্রথম মেয়ে হিসেবে দেশের বাইরে একা একা যাওয়ার চিন্তা করার দুঃসাহস দেখানো :p একেতো উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে নাই কোন ধারনা, তার উপর পরিবার থেকে পুরোপুরি অসমর্থন। সব মিলিয়ে বেশ প্যারা নিয়েই শুরু হয়েছিল আমার এই জার্নি। এখনও মনে আছে, উচ্চশিক্ষার প্রথম কাজ হিসেবে ২ বছর আগে ডিবিবিএলে ভার্চুয়াল কার্ড খুলতে গিয়ে কি পরিমান ভীত এবং চিন্তিত ছিলাম আমি। সেই আমি আজ ২ বছর পর যখন ভিসা ইন্টারভিউ দিতে যাই, বেশ নিশ্চিন্ত মনেই ছিলাম। সময় মানুষকে বদলে দেয়। যার ফলাফল, ২ বছর আগের সেই ভিত মেয়েটা আজ যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী এবং ২ বছর আগে আমার উচ্চশিক্ষার সিদ্ধান্তে বিরক্ত আমার পরিবার আজ আমার উপর খুব বেশি খুশি:D
হলিউড মুভি আর সিরিয়াল দেখার কারনেই মনে হয় আমেরিকাকে খুব বেশি পরিচিত মনে হত :p আর একটা কমন ধারনা ছিল যে ইউরোপ থেকে আমেরিকা অনার্সের সিজিপিকে কম গুরুত্ব দেয়, ফলে আমেরিকাকেই প্রথমে টার্গেট করে প্রিপারেশান নেয়া শুরু করি, ২০১৭ এর ফলের জন্য। বেশ সাদামাটা জিআরই স্কোরের পরও প্রফেসর থেকে মোটামোটি পসিটিভ রিপ্লাই পেয়ে ৪ টা ইউনিভার্সিটিতে এপ্লাই করে ফেলি। খুব বেশি অবাক হয়ে তারপর আবিষ্কার করি যে ৪ টার একটাতেও এডমিশান হয়নি, ফান্ডিং তো দুরের কথা। রিজেকশানের কষ্টকে ধামাচাপা দিয়ে,একবার না পারিলে দেখ শত বার নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে ভাবলাম পরের ফলে আবার এপ্লাই করব। ইতি মধ্যে দেশে কিছু চাকরির জন্য এপ্লাই করা শুরু করলাম। তার মাঝে এয়ারফোরসের ডিরেক্ট এন্ট্রির জন্য আইএসএসবিতে ৪র্থ দিনে রেড কার্ড খেয়ে রিজেকশানের কষ্ট আরেক বার উপলব্ধি করলাম।
২০১৭ এর অগাস্ট থেকে ২০১৮ এর মার্চ পর্যন্ত ৮ মাসের স্মৃতি আমার কাছে খুব বেশি ঝাপসা। পুরাপুরি ভাবে হতাশ হয়ে আমি যে আদৌ তখন কি করতেসিলাম, আমার নিজের কাছেই তা স্পষ্ট না। এই বছর মার্চে গিয়ে আমার টনক নড়ল এবং বুঝলাম যে শেষ একটাই সুযোগ আছে আমার হাতে এপ্লাই করার কারন আমার টোফেল স্কোর অল্প কিছুদিন পরই এক্সপায়ার হয়ে যাবে। ততদিনে আমেরিকায় এপ্লাই করার সময় শেষ। ভাবলাম শেষ একবার চেষ্টা করে দেখি জার্মানিতে। মার্চের ২৩ তারিখে সিদ্ধান্ত নিলাম এপ্লাই করার। জার্মানির এপ্লিকেশান প্রসেস বুঝে সব রেডি করে তাড়াহুড়া করে এপ্লাই করে ফেললাম অনেক গুলা ইউনিভার্সিটিতে। খুব বেশি আশা ছিল না অফার লেটার পাবার বিধায় বন্ধুদের বারবার বলা সত্ত্বেও ভিসা ইন্টারভিউয়ের ডেট আগে থেকে নিয়ে রাখিনি :p
জুনের ৯তারিখে প্রথম অফার লেটার পেলাম, ইমেইল দেখার পর মনে হচ্ছিল যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাইছি 😀
তারপর ভিসা ইন্টারভিউর স্পেশাল এপয়েন্টমেনট পেলাম জুলাইয়ের ৮ তারিখ। ভিসা ইন্টারভিউ আসলে খুব সাধারন একটা কনভারসেশান ছিল। আমার সাবমিট করা ডকুমেনটের তথ্য গুলাই আরেকবার আমার মুখ থেকে শুনে নিচ্ছিল। আমার ভিসা পেতে অন্য সবার থেকে অনেক বেশি সময় লেগেছিল এবং এই ব্যাপারে আমার মনে হয়েছে যে এমব্যাসি কিভাবে কাজ করে সেটা প্রেডিকট করা সম্ভব না, অতএব ভিসার ডিসিশান আসতে দেরি হলে আসলে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করাটাই উত্তম। সত্যি বলতে বাইরে এপ্লাই করার পুরা প্রসেসটার মাঝে অনেক কিছুই প্ল্যান অনুযায়ী হয়না, সেক্ষেত্রে একটু পেশেন্স আসলে পুরা প্রসেস টাকে অনেক বেশি সহজ করে তুলতে পারে।
আমি খুব বেশি কৃতজ্ঞ সেইসব বড় আপু ভাইয়াদের কাছে যাদের হাত ধরে জার্মান প্রবাসের এই প্লাটফর্ম। জার্মানিতে এপ্লাই করা থেকে শুরু করে ভিসা পাওয়া পর্যন্ত সব রকমের তথ্যের ভাণ্ডার হল গ্রুপ, যে কোন কিছু জানার থাকলে, গ্রুপে একটু সার্চ করলেই সেটা পেয়ে যেতাম। আর একেবারে হাস্যকর টাইপের প্রশ্ন গুলার জন্য ছিল বন্ধু আতিক, নির্দ্বিধায় যাকে যে কোন কিছু জিজ্ঞেস করা যেত 😀
২ বছর অনেক লম্বা সময় এবং এখন আমি বিশ্বাস করি যে যখন একটা রিজেকশান হয়, একটা স্বপ্নের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, সেটা আসলে ভালর জন্যই হয়। কারন সেটা নতুন একটা স্বপ্নের দরজা খুলে দেয় এবং সেই নতুন স্বপ্নটা আসলে বেটার হয় :p
আমার প্রোফাইলঃ
Bachelor: Genetic Engineering and Biotechnology (SUST), CGPA: 3.06 (July, 2016)
Gre: 301 (October, 2016), TOEFL: 103 (November, 2016)
NO publication/work experience
Intended University: Christian albrechts University of Kiel, Masters program: Agrigenomics
Got offer letter: June 9, 2018
Visa interview: 8 July and Visa collection: 23 August
Got offer letter from University of Giessen (Agrobiotechnology) and Oldenburg University( Microbiology), Also got shortlisted( I refused to take part in the lottery as I already selected Kiel) for Heinrich Heine University Dusseldorf (Translational neuroscience)
I really need ur some advice…pls