ধরেন আপনি হলেন কুদ্দুস, আর আপনার বান্ধবী বিলকিস। আরে ভাই জানি, আপনার বাপ মায়ে টাকা পয়সা খরচ করেছিল, আকিকা দিয়েছিল এত সুন্দর নাম দেয়ার জন্য। কিন্তু কিছুক্ষনের জন্য ধরতে তো আর সমস্যা নাই। তো ধরেন।
আপনি কুদ্দুস একদিন পার্কে বিলকিসের হাত ধরে হাটছিলেন। হঠাৎ বিলকিস বলল অনেক তো ইটিশ পিটিশ হলো, চলো এইবার আমরা শাদী মোবারক করি। আপনিও বিবাহ পরবর্তী পৌরাণিক শান্তির কথা চিন্তা করে এক লাফে রাজি হলেন এবং শাদী মোবারক করলেন। বছর খানেক পরে আপনারা দুইজন থেকে তিনজন হলেন, মানে আপনাদের একখান বাচ্চাও হল। তার নাম দিলেন আবুল।
তো আপনি কুদ্দুস, বউ বিলকিস আর পোলা আবুল মিলে সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আপনি এত দিনে বুঝে গেছেন, যে পৌরাণিক শান্তি আপনি আশা করে ছিলেন ওটা ছিল শুধুই ভ্রম। এর মধ্যে পাশের বাড়ির পাশে নতুন এসেছেন জরিনা বেগম। জরিনারে দেখলে আপনার কেমন কেমন জানি লাগে, পরান ধড়পড় ধড়পড় করে। খুব স্বাভাবিক, পাশের বাসার জরিনা সখিনাদের প্রতি পুরুষ মানুষের টান অাজন্ম। তো আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন বিলকিসরে তালাক দিবেন এবং জরিনারে কাছে ডাকবেন।
তালাকও হল ঠিক মত নিয়ম কানুন মেনে। এখন আপনিও খুশি, জরিনাও খুশি। কিন্তু মাঝখান থেকে বাধা হয়ে দাঁড়াল জালিম হাছিনা সরকার। সরকার বলল আপনার জরিনারে ভালো লাগে ভালো কথা, বিলকিসরে তালাক দিছেন তাও ব্যাপার না কিন্তু এখন বউ বিলকিস আর পোলা আবুলের দায়িত্ব অনেকাংশে আপনাকে নিতে হবে, আপনাকেই দিতে হবে ভরণপোষণ, তাও ভালো অঙ্কের, তাও আবার প্রতি মাসে! আপনি কুদ্দুস তো শুনে মহাকাশ থেকে পড়লেন। অবশ্য আদেও পড়তেন কিনা কি জানি, মাধ্যাকর্ষণ বলের কারনে হয়ত ঝুলে থাকতেন।
এইবার আসল মফিজ। মফিজ হল আপনার অতি ঘনিষ্ট বন্ধু, যে সব সময় আপনার আশে পাশে থাকত । এখন মফিজ আপনার এহেন চুদুর বুদুর অবস্থা দেখে ভীত হল এবং বুকে এক গাদা থুথু দিল। সিদ্ধান্ত নিল প্রেম করমু কিন্তু বিয়া করমু না, অনেকটা বাংলা সিনেমার ‘ শয়তান দেহ পাবি তো মন পাবি না’ টাইপের ব্যাপার স্যাপার। যেই কথা সেই কাজ, বিয়ে বাদ দিয়ে বান্ধবী রাহিমার সাথে একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিল, যাকে বলে লিভ টুগেদার। আবার ওইদিকে রহিমা ভাবল, মফিজ যেহেতু বিয়ে করবেই না, বাচ্চার দায়িত্ব নিবেই না তাহলে সে কেন বাচ্চা নিয়ে শুধু একা একা ঝামেলা করতে যাবে ! তো এভাবেই বিয়ে বাচ্চা ছাড়ায় চলতে লাগল মফিজ রহিমার বাকি জীবন।
এই হইল ইউরোপ তথা পশ্চিমা আধুনিক বিশ্বের পারিবারিক অবস্থা। যদিও সরকারের উদ্দেশ্য ছিল পরিবারকে নিরাপদ করা, পারিবারিক সম্পর্ককে সুদৃঢ় করা কিন্তু অতি চালাক মফিজরা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে টিকা দেয়ায় বন্ধ করে দিয়েছে। অনেকটা এই কারনেই পশ্চিমা বিশ্বে বিয়ে অনেকাংশেই বিরল, জন্মহারও কমতির দিকে। বলছি না এটাই একমাত্র কারন, তবে নিঃসন্দেহে অন্যতম।