হেল্প লাগবে?
—————–
অনেক সময় নারী যাত্রীরা ছোট শিশু সাথে নিয়ে বিদেশ থেকে দেশে আসেন। কখনও কখনও বয়স্ক বা অসুস্থ ব্যক্তি শক্ত সমর্থ কাউকে সাথে না নিয়ে দেশে আসেন। ঢাকায় বিমানবন্দরে পৌছে হেলথ ও ইমিগ্রেশনের কাজ শেষে লাগেজ বেল্ট থেকে লাগেজ সংগ্রহ করে ট্রলিতে উঠিয়ে ট্রলি ঠেলে গাড়িতে ওঠার জন্য ক্যানপি পর্যন্ত যাওয়া তাদের জন্য সহজসাধ্য হয় না। একইভাবে বিদেশ যাত্রার সময়েও এরকম যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন যদি তাদের সাথে বড় বড় লাগেজ থাকে।
এরকম সমস্যায় যাত্রীরা হেল্প খোজেন৷ দেখা যায় যে বিমানবন্দরে বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীরা যার যার কাজ ফেলে যাত্রীদের লাগেজ ঠেলে হেল্প করে টু পাইস কামানোর ধান্দা করেন৷ বড় বড় এয়ারলাইন্সের যাত্রীরা এ সমস্যা নিরসনে অনেক সময় দরকার না থাকলেও হুইলচেয়ার বুকিং দেন৷ কারণ তারা দেখেছেন যে হুইলচেয়ার ঠেলার জন্য নিয়োজিত কর্মী যাত্রীকে লাগেজ বেল্টের পাশে নিয়ে এসে অপেক্ষমাণ রাখেন এবং যাত্রীর কাছ থেকে লাগেজ ট্যাগ নিয়ে ট্যাগের সাথে লাগেজ মিলিয়ে তা ট্রলিতে উঠিয়ে নেন৷ তারপর এক হাতে যাত্রী এবং অপর হাতে ট্রলি ঠেলে ক্যানপি পর্যন্ত নিয়ে যান৷ এত পরিশ্রমের কাজটি করার জন্য যাত্রী নিজ থেকেই হুইলচেয়ার ঠেলার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীকে বকশিস দেন।
যদিও হুইলচেয়ার ঠেলে বকশিস নেয়া আইনসম্মত নয়। আবার তাদের ডিউটি তো শুধু হইলচেয়ার ঠেলা। যাত্রীর লাগেজ সংগ্রহ ও তা ট্রলিতে উঠিয়ে ঠেলা তার ডিউটির অন্তর্ভুক্ত নয়। বেল্ট থেকে লাগেজ সংগ্রহ ও লাগেজ ঠেলার কাজে হেল্প পাওয়া যাবে এই আশায় মোটামুটি সুস্থ অনেক যাত্রী যখন হুইলচেয়ার বুকিং দেন তখন অন্য সমস্যার সৃষ্টি হয়। অসুস্থ যে যাত্রীদের জন্য হুইলচেয়ার ব্যবহার অপরিহার্য তাদের জন্য হুইলচেয়ার জোগান দিতে কখনও কখনও সমস্যা হয়।
যে সমস্যাগুলির কথা বললাম সেগুলির সমাধানের ব্যবস্থা বিমানবন্দরেই আছে৷ অনেকেই জানেন না যে বিদেশগামী ও বিদেশফেরত যাত্রীদের লাগেজ সংক্রান্ত বিষয়ে হেল্প করার জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটির অনুমোদিত ছয়টি মিট এন্ড গ্রিট সার্ভিস প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগক্রমে অথবা অনলাইনে বুকিং দেয়ারও ব্যবস্থা আছে৷ যাত্রী প্রতি সার্ভিস ফিও যাত্রীর সাধ্যের মধ্যেই। আগে থেকে বুকিং দেয়া বিদেশফেরত যাত্রীর নাম প্ল্যাকার্ডে লিখে তারা ইমিগ্রেশন এলাকার ঠিক বাইরে অপেক্ষমাণ থাকেন। সেখান থেকে যাত্রীকে নিয়ে লাগেজ বেল্ট থেকে লাগেজ ট্রলিতে তুলে তারা ক্যানপি পর্যন্ত নিয়ে যান।
মানি রিসিটের মাধ্যমে তারা নির্ধারিত ফি গ্রহণ করেন। এর অতিরিক্ত কিছু নিলে বা দাবি করলে অথবা মানি রিসিট ছাড়া টাকা নিলে শাস্তি পেতে হয়। একইভাবে বিদেশগামী যাত্রীরা বুকিং দিয়ে থাকলে তারা যাত্রীর সাথে যোগাযোগক্রমে আন্তর্জাতিক টার্মিনালের দোতলায় ড্রাইভওয়েতে যাত্রীর নাম লেখা প্ল্যাকার্ডসহ দাঁড়িয়ে থাকেন। চেকইন কাউন্টারে যাত্রীর ভারী লাগেজ বুকিং দেয়া পর্যন্ত তারা যাত্রীর সাথে থাকবেন। ছয়টি মিট এন্ড গ্রিট সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের কারও প্রতি আমাদের পক্ষপাতিত্ব নেই। তবে বিনা নোটিশে কল করার পর যারা আগে সাড়া দিয়েছে এবং যাদের অনলাইন বুকিং ব্যবস্থা দেখা গেছে তাদের নাম তালিকায় উপরের দিকে এসেছে। আশা করি হেল্প এর জন্য যাত্রীরা আর টু পাইস কামানোর ধান্দায় থাকা কর্মীদের উপর নির্ভর করবেন না। যারা এ কাজের জন্য নির্ধারিত, বুকিং দিয়ে তাদেরই সেবা গ্রহণ করবেন।
আর সেবা নিতে গিয়ে কোন অসঙ্গতি দেখলে এয়ারপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে ফোন করবেন 01304050603 নাম্বারে।