১।কেউ যদি ইনহেরিটেডলি(প্রপিতামহ, পিতামহ বা পিতা ইত্যাদি) কিছু পেয়ে থাকে তাইলে সেইটা নিয়া তার সাথে বাতচিত করা উচিত না। এতে সদাসর্বদা ধরা খাইতে হবে। পীরের পোলাই পীর হবে। তুমি পীর হইতে চাইলে একটাই রাস্তা পীরের লাইনে কথা বলতে হবে।আর তোমার পূর্বপুরুষের যা কিছু কীর্তি সর্বদা আগেই আলোকপাত করতে হবে। না বলে চুপ থাকলে,কেউ জানতে চায়নাই তাই বলিনাই এই ভাবে থাকলে কিংবা বলতে দেরি করে ফেললে ধরা।
২।নিরপেক্ষ থাকতে হবে না। তবে যার সাথে কথা বলতেছ তার লাইনে কথা বলতে জানতে হবে। পক্ষ রাখতে হবে মনে মনে। জাতে থাকা মানুষের কথার পীঠে কথা বলা যাবেনা। তোমার কাছে সেটার যৌক্তিক মূল্য থাকলেও তাদের কাছে নাই। জাত একটা ব্রাদারহুড এখানে ঢুকতে হইলে অলরেডি জাতে আছে এমন কারো পিছে পিছে ঢুকতে হবে। সো বিহেভ ইউরসেলফ।
৩।টাকা পয়সা খুব দরকারি জিনিষ,খুবি ভীষণ দরকারি; তবে রেডিমেড পাইলে যেমন (শ্বশুরবাড়ি, বাপের বাড়ি বা পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে) হাতের ময়লা। টাকা পয়সা শুধু মাত্র নিজের জন্য।
৪।শৌখিনতা জাত এর প্রমাণ। মাঝে মাঝে খুব শৌখিন হইতে ইচ্ছা করে, একদিনের জন্য হইলেও হইতে হবে। তবে ছোটবেলা থেকে খেত ছিলাম তাই সৌখিন হইতে গেলে অনন্ত সাবের মত দেখাবে সিউর, সৌখিন হুট করে হওয়া যায়না।
৫।কাটা চামচ দিয়ে খেতে পারা আরেকটা জরুরি জিনিষ, শিখি নাই। এখন জাতে উঠা কঠিন হয়ে গেসে। ৭ বছর ধরে দেশের বাইরে। ৭ বছরে সাতবার বোকামি করছি। ৭ বার একগাদা টাকা খরচ করে স্বদেশ গিয়া চিটাগাং এর রাস্তাঘাটে ধুলাবালি খাইসি। পরিবর্তে ৭ খানা উরুপ এর দেশ ঘুরলে জাত ঠিক হইত।
৬।নিজের জাত থাকুক না থাকুক সন্তানের জাত ঠিক করে দেয়া আরও জরুরি, তারা যেন অটোমেটিক জাতে থাকে, তাদের জাত খুঁজে বেড়াইতে হইলে মহাবিপদ।
—-তাই, টেকা-টুকা কামাইতে বিদেশে আইসা পড়সি। কিপ্টা মানুষ আমি(কিপ্টারা সৌখিন হইতে পারেনা তাদের জাত নিচু থাকে তাই কিপ্টামি ছাড়তে হবে, সৌখিন মানুষ টাকা পয়সার থোড়াই কেয়ার করে), অচিরেই টেকা-টুকা হয়ে যাবে আল্লাহ ভরসা। এইটাই আমার লাইফস্টান্ডার্ড এইটা ছাড়া মানুষ বাঁচে নাকি? এইভাবে থাকতে হবে। যেরম পাই সেটাই আমার স্ট্যান্ডার্ড এইভাবে চললে কিপ্টা আর খ্যত হয়ে যাইতে হবে।
রেডিমেড জাত না থাকাতে জাত বানাইতে গিয়া ভুল ভাল হইসে, জাত ওয়ালা মানুষেরা সেটা ইশারা ইঙ্গিতে বুঝাই দিসে। ভুল হওয়াটাও একটা শিক্ষা, নো গ্রিফ।
প্রব্লেম নাই, আমার পুলা হইলে তার জাত থাকবে। সে সবদিক ঠিক রেখে অন্যের জাত পাত নিয়া ২ লাইন বলতে পারবে। তবে এইদিকে এখনো পিছাইয়া আছি, পোলাপান নাই। আনস্মার্ট জেনারেশন গ্যাপ। সেটাও ম্যানেজ করতে হবে।
রেডিমেড ক্লাস ছাড়া যা কিছু করা যায় সবি প্রায় করা হইয়া গেছে। আর কয়দিন পরেই ক্লাস এ উঠে যাব। ফেইসবুকে নরম করে কথা বলতে হবে, আর উরুপের এইরকম নিসর্গ ছবি দিতে হবেঃ
ছবি তুলার সময় এরকম বোকামি করা যাবেনা, ছবির ঠিক মাঝখানে ভুঁড়ি উপচাইয়া গাল ফুলাইয়া একটু বাঁকা হয়ে দাঁড়াইতে হবে। গালের উপরে আরেকটা গাল আর ভুঁড়ির উপরে একটা মেজ্জান না হইলে জাত হয় না সেটা বুঝতে হবে(আগে বোকা ছিলাম জাতপাত নিচু ছিল, গাল ভাঙ্গা পেট-পিঠ এক ছিল তাই ছবি আছে মানুষ নাই)।
ভয় একটাই শুরুতে যা বললাম, জাত নাকি ইনহেরিটেড হয়। পূর্ব পুরুষ জাতে উঠে গেলে উত্তর পুরুষের সোনায় সোহাগা। তখন তারা জন্মসূত্রে ‘সর্বদা সঠিক’ এরূপ একটি অনুচ্চারিত রীতি, বিশ্বাস, আস্থা, গর্ব যাই বলি না কেন মানব জাতিতে আছে বৈকি। কাজেই এখনি নেমে পড়তে হবে জাতে উঠার সঠিক রাস্তাটা খুঁজে পেতে হবে।ভুল করলে জাত ওয়ালারা টিটকারি মারবে। এইটাই স্বাভাবিক, কেউ কি নিজের যায়গার মূল্য কমতে দিতে চায়?
আজ থেকে শুরু হল জাতে উঠার চেষ্টা প্রথমেই পীরদের কাছে ক্ষমাভিক্ষা “হ ভাই তোরাই ঠিক আমি ভুল”!