এটা কোন সাধারণ রান্নার ছবি না। একটা করুণ ইতিহাস আছে।
অফিস শেষে আমার এক টার্কিশ কলিগের গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে নাম করা এক মাংসের দোকানের সামনে হঠাৎ ব্রেক কষে সে বলল, “ভাই মাংস কিনবো”, আজকে তার বাসায় পার্টি আছে। খুব পরিষ্কার পরিপাটি দোকান। এত সুন্দর মাংসের দোকান আমি জীবনে দেখিনি। থরেথরে সাজানো কাঁচা মাংসগুলো দেখে আলমারিতে সাজানো শো’পিস মনে হচ্ছিল। দেখেই লোভ লেগে গেল। মনে মনে প্রার্থনা করছিলাম আমার টার্কিশ কলিগ যেন আমাকে একটু দাওয়াত করেন। মাংস খাবার লোভ তো আছেই, ঘরে কোন রান্না নাই, এটাও একটা বিরাট কারণ। বেরসিক কলিগ মনের কথাটা বুঝলনা। দাওয়াত পেলামনা। মনটা দুঃখে ভেঙ্গে গেলো। অস্থির হয়ে দোকানের ভেতরই পায়চারি করছি আর ভাবছি, “কি করবো, কি করবো”। ডীপ ফ্রিজে মাছ রাখা আছে, আজকেই মাছ রান্না না করলে নষ্ট হবে। কিন্তু আজকে যে গরুর মাংস না খেলে যেন মারাই যাব। তাই শেষ মেষ ১কজি মাংস কিনেই ঘরে ফিরলাম। ক্লান্ত শরীর রান্নার ধকল নেবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল। কিন্তু ঘাঢ়ের পেছনে তেরা রগটা বলল “শালা আজকে মাংস খেতেই হবে, যা আছে কপালে।”। আগামী কাল উইক-এন্ড, অনেক বেলা করে ঘুমাতে পারব, এই সাহস মনে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত গরুর মাংস রান্না করলাম।রান্নাটা সেলিব্রেট করার জন্য সাথে করল্লা ভাজি আর ডালও রান্না করে ফেললাম। রান্না বেশ ভাল হয়েছে। পেট ভরে ভাতা খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে টুথপিক দিয়ে দাঁত খোঁচাতে খোঁচাতে স্ট্যাটাসটা লিখলাম। এখন খুব ঘুম পাচ্ছে, আর কত? ঘুমাতে গেলাম।
Good Night, Sweet Dream!