বাংলাদেশ চিনেন ??
দেশের বাইরে আসার পর যে প্রশ্নটি সবচেয়ে বেশি শুনতে হয়, “আপনি কোথা থেকে এসেছেন ? “ উত্তরে বাংলাদেশ বলার পর প্রশ্নকারীর প্রতিক্রিয়া যে খুব একটা ভালো হয় না, সেটা নিশ্চয় বলার অপেক্ষা রাখে না।
অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাল্টা প্রশ্ন করতে হয়, “বাংলাদেশ চিনেন ?”। একটা বড় অংশেরই উত্তর আসে, “ এ………… আ…………কোথায় যেন শুনেছি নামটা”। প্রথম প্রথম ভৌগোলিক ভাবে ভারতের পাশ দিয়ে অথবা ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্থানের মধ্যে দিয়ে চেনানোর চেষ্টা করতাম। পরের দেশ দিয়ে আর কত দিন নিজেদেরকে চেনাবো। এখন সরাসরিই বলি, ওই যে বন্যা, ক্ষুধার্ত মানুষ, গরীব মানুষের দেশ। তখন ওদের মনে পড়ে যায়, “ ও …ও … ছোট দেশ, অনেক মানুষ, দক্ষিণ এশিয়া।”
বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনার পর এক জার্মান বলেছিল, সে নাকি স্কুলেই প্রথম শুনেছিল প্রথম বাংলাদেশের নাম। স্কুলে অনেকটা বাংলাদেশ আর জার্মানির জীবনমানের তুলনামূলক পার্থক্য পড়ায়, যাতে পড়ানো হয়েছিল বাংলাদেশ অনেক মানুষ একসাথে গাদাগাদি করে থাকে, কোন সুযোগ সুবিধার বালাই ছাড়ায়। যেটা জার্মানির ক্ষেত্রে উল্টা।
অ্যামেরিকান মেয়েতো আরও এক ধাপ এগিয়ে জানিয়েছিল, তার এক কোর্সে তাদেরকে দেখানো হয়েছিল, বাংলাদেশ দেখতে হাতের পাঁচ আঙ্গুলের মত। আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে সব নদী, তাই খুব সহজে বন্যা হয়, ভেসে যায় দেশ।
এক বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা, পরিচয় পত্রে Chittagong দেখার পর অতি উৎসাহে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “বাংলাদেশ থেকে ?”। ভেবেছিলাম, যাক শেষ পর্যন্ত বুঝি একজন পাওয়া গেল যে একটু ভালোভাবে বাংলাদেশ চিনে, চট্টগ্রাম চিনে। কিন্তু তার গানও ভিন্ন কোন সুর খুঁজে পেলো না। জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের গার্মেন্টসের এখন কি অবস্থা ? এক সঙ্গে এত মানুষ মারা গেল ? অনেক মানুষ না ? ব্লা ব্লা ? … ? …?
ভদ্রলোকের দেখি বাংলাদেশ নিয়ে অনেক জানাশুনা। আমি শুধু মাথাটা ১০ ডিগ্রি নামিয়ে, মিথ্যে হাসিটা একটু চওড়া করে, দাতির ফালিটা একটু সামনে বাড়িয়ে দিয়ে হে হে করে হেসে জি জিই করে গেলাম।
বলতে গেলে নিরানব্বই শতাংশ বাইরের মানুষেরই বাংলাদেশ বলতে ধারনা অতটুকুই। তবে এর বাইরেও যে কেউ নেই তা কিন্তু না। ফুটবল খেলতে আসা তুর্কি বংশদ্ভুত জার্মান বাংলাদেশী শুনে, মুষ্টিবদ্ধ হাত শক্ত করে দেখিয়ে বলেছিল “টিগার”। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে যখন বলল, “ ওই যে শুন্টরবানে পাওয়া যায়” তখন বুঝলাম সে টাইগার(বাঘ) বলছিল, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর ভক্ত। এই বাঘের শক্তি, গতি, ক্ষিপ্রতা তাকে মুগ্ধ করে। তাই সে খোঁজ নিয়ে জেনেছিল, এই বাঘ বাংলাদেশে পাওয়া যায়, সুন্দরবনে।
ছবিঃ সংগৃহীত
পরের দেশের কেউ যখন নিজের দেশ নিয়ে গর্ব করে, সেটা এক অন্যরকম অনুভূতি। আর এই সুযোগ বাংলাদেশীদের জীবনে অন্তত খুব একটা বেশি আসে না, আমিও শুধু ওই একবারই পেয়েছিলাম।
শুনলাম সুন্দরবন ধ্বংসে সরকার, জনগণ একসাথে হাতে হাত রেখে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণ সারা দেশের বন, জংগল, পাহাড় পর্বত শেষে এখন সুন্দরবনেও বসতি গেড়েছে। আর সরকার তো তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস সুন্দরবন ধ্বংসে যা যা দরকার সব দিয়ে যাচ্ছে।
বসে বসে ভাবি, আমরাও ভারতের মত দারিদ্রতা ছাপিয়ে ITর দেশ হিসেবে পরিচিত হতে পারতাম, জার্মানির মত হিটলারের দেশ ছাপিয়ে Mercedes Benz বা BMW এর দেশ হতে পারতাম। দুর্নীতি, বন্যা, দারিদ্র্য ছাপিয়ে IT, BMW না হোক অন্তত আমরাও হতে পারতাম সুন্দরবনের দেশ, হতে পারতাম বিশ্বসেরা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেশ।
আফসোস আমরা দুর্নীতি, বন্যা, দারিদ্র্যই বেছে নিয়েছি।
Only uneducated or illiterate people of 2015 will not know about Bangladesh. No matter if they are German, Americans or whatever. I felt and still feel proud to tell someone here in Germany if anyone asks me where do I come from. I tell them Bangladesh. If they say Bangladesh??? Where is it? I never say its beside India or Asia, I just tell them to go to the internet or go to their clothing shops (Kleidung) example Kik, NewYorker Charles Vöegle and see the names from where the clothes are made. জার্মানি ভর্তি বাংলাদেশের কাপড়। আর বাংলাদেশ এর fabrics is one of the best. এর পরে ও এইখানকার কেউ বাংলাদেশকে না চিনলে আমার তারে চিনার কোনো দরকার নাই। এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যেমন যারা জার্মানি বলতেই হিটলার কে চিনে, ঠিক তেমনি কিছু মানুষ আছে যারা বাংলাদেশ বলতেই বন্যা বুঝে। এই ধরনের মানুষ হলো আবাল।