২০১৫ সালের ফেব্রিয়ারি মাসে বই মেলাতে এসেছে বাংলা ভাষায় লেখা রাগিব হাসানের দুইটি বই। বই এর কিছু অংশ আমরা আমাদের এখানে শেয়ার করা হবে আপনাদের পড়ার জন্যে…হয়তো চট করে একটা অংশ পড়া দরকার, হাতের কাছে বইটি নেই তখন ঘুরে যেতে পারেন এখানে…অনলাইন এ বইটি কেনার সুজোগ ও রয়েছে(দেশে এবং বিদেশে)। বইটি কেনার জন্যেও অনুরোধ থাকলো কারণ তা থেকে লেখকের যথাযোগ্য সন্মান দেয়া হয় আর সেই সাথে ছাপানো বই পড়ার আমেজই আলাদা…সর্বপরি এই লেখাগুলো লেখার একটাই উদ্যেশ্য: লেখক চেয়েছেন যাতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা গবেষণা কি এবং কিভাবে করতে হয় তা সহজে শিখতে পারে। সেই উদ্যেশ্যকে সফল করার ইচ্ছা নিয়েই আমাদের এই বিশেষ প্রচেষ্টা।লেখক এবং প্রকাশক উভয়কে আমাদের ধন্যবাদ এই পোস্টগুলো শেয়ার দেয়ার অনুমতি দেয়ার জন্যে।

rp_2-300x298.jpg রাগিব হাসান

~ গবেষণায় হাতে খড়ি — বোনাস অধ্যায়: গবেষণায় সংশয়: কান পাতলা নয়, হয়ে পড়ুন গ্যালিলিও ~

(আমার “গবেষণায় হাতে খড়ি” বইয়ের পাঠকদের জন্য একটি বোনাস লেখা)

ভালো একজন গবেষকের সবচেয়ে বড় বন্ধু হলো সংশয় — কারো কথা প্রমাণ ছাড়া সত্যি না ধরা, তা সে যেই বলুক না কেনো। গবেষণার জন্য আপনাকে পড়তে হবে অন্যদের গবেষণা ও কাজ, কিন্তু খুব বিখ্যাত কেউ বলেছেন বলেই কোনো কিছু বিশ্বাস করে ফেলতে হবে, এমনটা না।

হাজার বছর ধরে চালু ছিলো ধারণাটা এমন যে, ভারী জিনিষ তাড়াতাড়ি পড়বে, হালকা জিনিষ আস্তে পড়ে। মহামতি এরিস্টোটল, অমুক তমুক বলে গেছেন, তাই এই কথা সত্যি বলে ধরতে হবে, এমনটাই ছিলো মত। কিন্তু সবার এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে গ্যালিলিও পিসার সেই বিখ্যাত টাওয়ার থেকে ভারী আর হালকা বল ছেড়ে দিয়ে দেখান, একই সময়ে দুইটাই পড়ছে মাটিতে।

আপনি গ্যালিলিও নন, কিন্তু একজন সংশয়ী গবেষক হতে তো সমস্যা নাই। যখন কোনো একটা পেপার পড়তে বসবেন, তখন গ্যালিলিও হয়ে পড়ুন। রিসার্চ পেপারের শুরুতে অনেক দাবি, অনেক “ফাটায়ে ফেলেছি” জাতীয় কথা থাকবে। লেখক যদি টুরিং এওয়ার্ড বিজয়ীও হন, তাহলেও কিন্তু তার কথা বিশ্বাস করার কোনো দরকার নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত না পেপারে প্রমাণ দিয়ে দেখানো হচ্ছে যে এই কথাগুলা সত্যি, ততক্ষণ সেটাকে ভুল বলেই ধরে রাখুন।

ধরা যাক, আপনি একটা পেপার পড়ছেন, সেখানে বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানী ডঃ আবুল দাবী করেছেন, তাঁদের বানানো ঘাস কাটার নতুন এই পদ্ধতি আগের পদ্ধতির চাইতে ভালো। এখন প্রশ্ন যেটা মাথায় রাখতে হবে তা হলো, কীভাবে সেটা বোঝা যাবে? আগের পদ্ধতির সাথে কীভাবে তুলনা করা হলো? ডঃ আবুল কি নিজে পাশাপাশি দুইটা মাঠে অন্য সব কিছু ঠিক রেখে কেবল ঘাস কাটার তরিকা পাল্টে তুলনা করে দেখেছেন? সেই তুলনাটা কি ন্যায্য তুলনা? যদি ভালো হয়ে থাকে তাহলে কতোটা ভালো এবং এই পার্থক্যটা কি স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট? (মানে পার্থক্যটা কি এতোই নগন্য যে ধর্তব্যের বাইরে)।

এইভাবেই আসলে রিসার্চ পেপার পড়তে হবে, পুরাপুরি সংশয়ী হয়ে। যতোই বিখ্যাত বিজ্ঞানীর লেখা হোক না কেনো, প্রমাণের মাপকাঠিতে যদি না টিকে, তবে গবেষক হিসাবে সেটাকে আপনার বিশ্বাস করার কোনোই কারণ নাই। বিজ্ঞান, গবেষণা — এসব গড়ে উঠেছে প্রমাণের ভিত্তিতে; এখানে বিশ্বাসের কোনো স্থান নাই।

তাই ভালো গবেষক হতে হলে হয়ে পড়ুন সংশয়ী, গ্যালিলিওর মতোই যাচাই বাছাই করে তবেই ঠিক করুন, যাচাই করুণ গবেষণাকে, জ্ঞানকে।

বই এর প্রকাশকের  পেজটি দেখতে করতে ক্লিক করুন আর ফেইসবুক পেজ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন এবং দ্বিতীয় লিংক

mm

By Tanzia Islam

Tanzia Islam is an admin of BSAAG, learn german and Germanprobashe.com this is a volunteer work from her side for the Bangladeshi community. She is also an admin of Free Advice Berlin. Her volunteer activities are related to educational development, city development and environmental protection. Tanzia is a freelance writer and researcher. Currently she is a doctoral researcher at Technical University of Berlin.

Leave a Reply