অনেক আগের একটা লিখা……… নতুন করে ঘষা মাজা করে আপনাদের জন্য দিলাম যদি কারো উপকারে আসে…..
রাজিব আট থেকে নয় বছর বয়স হবে ওর,আমা্দের দোকানের(রাজ ফ্যাশন হাউস) পাশে NGO অফিসে চাকরি করে। চাকরি বলতে অফিসের স্টাফদের ছোটখাটো হুকুম শোনে। মাসে ১৫০০ টাকা বেতন পাই।রাজিব অসম্ভব স্বপ্ন দেখে। যে রাজিবকে ছোট বোনের জন্য দেড়শ টাকার একটা পোশাক কিনতে বার বার পকেটের দিকে তাকাতে হয় সেই রাজিব স্বপ্ন দেখে সে দশ তলা বাড়ি করবে।
রাজিবের ধারণা যারা চোখে চশমা ব্যাবহার করে, যাদের ল্যাপটপ থাকে তারা ভার্সিটি নামক বড় কোন স্কুলে পড়ে আর তারা অনেক জ্ঞানী এবং সব কিছু জানে । তাই সে আমি দোকানে থাকলে আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে “ভাই দশ তালা(তলা) বাড়ির পুতা (ফাউন্ডেশন) দিতে কয় গাড়ি ইট লাগবে??? আবার বলে ভাই দশ গাড়ি ইট দিয়ে হবে”?? আমি বলি রাজিব আমি কখনও দশ তলা বাড়ি করিনি তাই সঠিক বলতে পারব না তবে দশ গাড়ি ইট দিয়েই হবে মনে হয় । আমি কখনও রাজিবকে সত্য কথাটা বলি না যে, রাজিব তোর থাকার জন্য নিজের কোন জায়গা নেই আর সেই তোর দশ তলা বাড়ির স্বপ্ন অসম্ভব । হয়ত রাজিব এই স্বপ্নটা দেখেই আনন্দ পাই তাই তার স্বপ্নটা ভাঙ্গার সাহস আমার হয় না।
আসলে স্বপ্ন মানুষকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে হোক না সে অসম্ভব কল্পনা তবুও সামনে চলার অনুপ্রেরণাই হচ্ছে স্বপ্ন। আমি, আমরা সবাই রাজিবের মত অসম্ভব বা সম্ভব স্বপ্ন দেখি । আর শুধু নিজেদের একটু চেষ্টা থাকলে অনেক অসম্ভব স্বপ্নও সত্যি হয়ে যাই। শুধু সাহস করে একবার রাস্তাই নামতে হবে…
আপনি যখন কোন নতুন কিছু করতে চাইবেন আপনার চারপাশের কয়েক ধরনের মানুষ পাবেন। এক শ্রেনির মানুষ আপনার স্বপ্নের কথা শুনে প্রথমেই উপহাস করে বলবে হুঃ ছেড়া কাঁথাই শুয়ে কোটি টাকার স্বপ্ন!!
অন্য এক শ্রেণীর মানুষ যারা আপনার স্বপ্নের কথা শুনে দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে এই পথে হাঁটা পৃথিবীর সমস্ত ব্যর্থ মানুষের গল্প শুনাবে। বিজয়ী মানুষের আনন্দের থেকে ব্যর্থ মানুষের গ্লানির কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।।…..আপনি পথ চলা শুরু করার আগেই আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দিবে।
আর একশ্রেণীর মানুষ আপনকে বিশ্বাস করবে……আপনার পথ চলাই কোন ভাবে সাহায্য করতে না পারলেও ‘তুমি পারবে’… এই ছোট বাক্যটা দিয়েই আপনাকে অনুপ্রেরণা দিবে।
আপনি যদি আপনার নিজের প্রতি বিশ্বাস করতে পারেন আর আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দেবার জন্য যথা পরিশ্রম করতে পারেন তাহলে প্রথম দুই শ্রেণীর মানুষের উপদেশ উপেক্ষা করতে হবে………।কাল নয়, আজই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন……জয় আপনার হবেই রাস্তা যত কঠিনই হোক না কেন। আর তার উজ্জ্বল প্রমাণ সামার সেমিস্টারে ভিসা প্রাপ্ত স্টুডেন্টগুলো। এম্বাসির নতুন নতুন জটিল সব নিয়মের পরও তারা পেরেছে শুধুমাত্র তাদের যোগ্যতা আর তার থেকেও বড় (যোগ্যতা অনেকরেই আছে কিন্তু তারা ভিসা পায় নি) হল তাদের আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রমের কারণে।
উইন্টার সেমিস্টারের এপ্লিকেশন শুরু হয়ে গেছে………বাবা মার কাছে দোয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে যান………যাত্রা থামাবেন না, যতক্ষণ না জার্মানি এসে পোঁছাবেন।
সবার জন্য শুভ কামনা রইলো………।