১. ডিপ্লোমা পাস এক ছেলে ফেবুতে মেসেজ দিল, “ভাই, আমি জার্মানীতে ব্যাচেলর করতে আসতে চাই, কিভাবে কি করব একটু জানাবেন?”
আমি উত্তর দিলাম, “এ বিষয়ে আমার ধারণা নেই, ভাই। তুমি বিসাগে (জার্মান ফেবু গ্রুপ) জিজ্ঞেস করো।”
সে সাথে সাথে উত্তর দিল, “আপনি এ ব্যাপারে জানেন না?????? থাক, গ্রুপে জিজ্ঞেস করার দরকার নাই!”
এমন উত্তর পেয়ে প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ হলাম। ভবিষ্যতে সে আমার কাছ থেকে কোন সহায়তা পাবে কিনা বলা মুশকিল।
২. এক জুনিয়র বুয়েটিয়ান মেসেজ দিল, “ভাইয়া, আমি জার্মানিতে মাস্টার্স করতে আসতে চাই। বেশ কিছু প্রশ্ন ছিল।”
উত্তর দিলাম, “পরশু শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় তুমি ফ্রি থাকবা? স্কাইপেতে কথা বলা যেতে পারে।”
তাকে স্কাইপে আইডি দিলাম। শনিবার বিকাল ৫টা (জার্মান সময়) থেকে ৬টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। সেই ছেলের দেখা নাই। দুদিন পরে মেসেজ এল, “ভাইয়া, সেদিন বার্সার খেলা ছিল, তাই কথা বলতে পারিনি 😛 😛 কালকে বিকেলে সময় হবে? ”
বললাম, “ঠিক আছে, এবার কিন্তু মিস করোনা, ওকে?”
পরের দিন একই কাহিনী। দুদিন পরে সে অজুহাত দিল যে, টিউশনি থেকে ফেরার সময় রাস্তায় জ্যামে আটকা পড়েছিল! এরপর থেকে ওর সাথে আর কোন কথা হয়নি।
৩. এক সিনিয়র বুয়েটিয়ান আমাকে মেসেজ দিলেন, “তুমি কি পুতুলকে চেনো?
“কোন পুতুল?”
“কয়জন পুতুলকে চেনো? নাকি নতুন কাউকে জুটিয়েছ? আমার সাথে তাফাল্লিং কইর না!”
“ও অমুক ইউনির তমুক ব্যাচের পুতুল?” উত্তর দিলাম।
“এই তো লাইনে এসেছ! একটু আগে এমন ভাব নিলা যে, পুতুলের নাম জিন্দেগিতেও শোন নাই!!”
“কিভাবে আপনাকে সহায়তা করতে পারি?”
“ওর বান্ধবী সম্পর্কে কিছু তথ্য নিতে হবে। বিয়েশাদি সংক্রান্ত।
“আচ্ছা, কি তথ্য লাগবে জানাইয়েন, আমি পুতুলের কাছ থেকে সেগুলো নেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু আপনি আমাকে চার্জ করলেন কেন?” পাল্টা প্রশ্ন করলাম।
প্রায় ২০ মিনিট ধরে তিনি তার কমেন্টের ব্যাখ্যা দিলেন, যেগুলো পুরাই বাকোয়াস ছিল। আমিও সব বোঝার ভান করলাম। কারণ দীর্ঘদিনের ভাল সম্পর্কটাকে নষ্ট করতে চাইনি। পরে সেই ভাইয়ের সাথে পুতুলের বান্ধবির বিয়ে হয়ে গেল। বুঝলাম, উনি আসলেই তথ্য সংগ্রহে আমার সাহায্য চেয়েছিলেন!
এক সিনিয়র আপু বলেছিলেন যে, ইন্টারভিউ নেওয়ার সময় প্রার্থীর এটিচুড ও এপ্রোচকে ওনারা অনেক বেশি গুরুত্ব দেন, এমনকি সঠিক উত্তরের চেয়েও।
ফেসবুকেও অনেকেই অনেক তথ্যবহুল ও জ্ঞাননির্ভর কমেন্ট করেন, কিন্তু এপ্রোচ ও এটিচুডের কারণে অনেক সময় সবার কাছে ভুল বার্তা পৌছায়।
জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত এক দেশি বন্ধু আফসোস করে বলছিল, “আহা! সঠিক এপ্রোচ ও এটিচুড নিয়ে এগুলে অনেক দেশি ছেলে-মেয়েই এখানে বড় বড় পজিশনে থাকত।”
কিভাবে সঠিক এপ্রোচ ও এটিচুড তৈরি করা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে