আমি কি স্কলারশিপ /বৃত্তি পাবো? আমার cgpa…, আমার …, আমার সম্ভাবনা কতটুকু?
এমন নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খায় আমাদের মনে প্রতিদিন আর গোল গোল করে ঘুড়তে থাকে সব আশা ভরসা। আমাদের কাছে এমন প্রশ্ন প্রতিদিন আসে বারবার সেই একই কথা…
স্কলারশিপ এর নানান রং এবং নানান ধং। একে বুঝতে হলে এর ধরন আর আবহাওয়ার সাথে সাথে এর পরিবর্তনের বিষয়টিও বুঝতে হবে। যদি কড়ায় গন্ডায় হিসেব মেলানো যায় তাহলে এর দেখা মিলতেও পারে তবে অযথা নিজের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন না করে চিন্তা করে দেখা উচিত-আপনি কি ওই হিসেবের মাঝে পরেন কিনা…
তবে এইসব বর্ণনা দেবার আগে বলে রাখা ভালো যে কিছু যোগ্যতার মাপকাঠি আছে যেমন পরীক্ষার নম্বর, নির্ভুল লেখা, ভাষার মাপকাঠি, gre/gmat/যোগ্যতা নির্ধারনী পরীক্ষা,recommendation letter, স্টাডি গ্যাপ ছাড়া পড়াশোনা, work experience…ইত্যাদি যেখানে যা লাগে তা লাগবেই। কত হলে চলবে এই প্রশ্ন করা অবান্তর…যদি কোথাও ১০ এ ৫ পেলেই হয় কিন্তু এমন কেউ আবেদন করে থাকে যে ১০ এ ১০ পেয়েছে আর আপনি ১০ এ ৫ পেয়েছেন…আপনি কি বৃত্তি পাবেন? তাই খামোখা এমন প্রশ্ন না করাই ভালো।
স্কলারশিপের নানান ধং:
যদিও মনে হতে পারে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্যে বৃত্তি তবে আদতে তা নাও হতে পারে! প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের উদ্দ্যেশ্য আলাদা তার ওপর নির্ভর করা হয়। যেমন ধরা যাক সরকারী ভাবে শিক্ষামন্ত্রনালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে যেসব সার্কুলার আসে তার সিংহভাগ গচ্ছিত থাকে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের, কলেজের শিক্ষকদের জন্যে তারপরে লিস্টে আসে সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের এবং সর্বোপরি তলানিতে কিছু বাকি থাকলে দুই-একটা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কপালে জুটলেও জুটতে পারে।
কি কি তাদের চাহিদা?
বয়স, সখ্যালঘু, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, পড়াশোনার ধরন, দেশ/এলাকা ভিত্তিক, পরিবারের বার্ষিক আয়, রাজনৈতিক মতবাদ, …ইত্যাদি। তাই বিষয়গুলো ভাল করে খতিয়ে দেখতে হয় মাঝে মাঝে বৃত্তি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো একটু দেখে নিতে হয়।
কেমনে তারে পাওয়া যায়:
দাবার গুটি চালার মতন ব্যাপার এই স্কলারশিপ আর ফান্ড এর বিষয়গুলো। নানান সরকার এবং প্রতিষ্ঠান কিছু উদ্যেশ্য নিয়ে বৃত্তি প্রদান করে থাকে। কখনও কখনও চোখে যা দেখা যায় তার থেকে অনেক গভীরে থাকে প্রকৃত বিষয়গুলো যা খালি চোখে দেখা যায় না। কথার কথা বার্লিনে সবসময় বলা হয় সরকারের কাছে বৃত্তি দেয়ার মতন টাকা নেই কিন্তু অগস্ট, ২০১৫ সালে ঘোষনা দেয়া হলো যে সিরিয়ান শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীলাভের জন্যে বেশ উচ্চমাপের বৃত্তি প্রদান করা হবে। একটু চিন্তা করে দেখলেই হিসাবতা যে রাজনৈতিক লাভের চিন্তা তা কিন্তু বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। প্রশ্নতা হলো আপনি ওই রকমের কোন ছকে নিজেকে ফেলতে পারেন কিনা…যেমন আপনি সংখ্যা লঘু অথবা আপনার গবেষনার প্রপজাল এখন “হটকেক” তাহেল আপনার ৯০% সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
যারে না চাহিলে পাওয়া যায়:
এই ধরনটার জন্যে আপনার আলাদাভাবে কিছু করতে হবে না কেবলমাত্র পড়াশোনা আর কাজের ভেতর সততা থাকতে হবে। এমনকিছু বৃত্তি আছে যার জন্যে নিষ্ঠা থাকতে হয় আর কিছুই না। ডিপার্টমেন্ট থেকে আপনার কাজের সম্মাননা স্বরূপ এমন বৃত্তি দেয়া হয়। এর জন্যে কাজের যোগ্যতা দেখাতে হয় খালি মুখে তেল মারলে হয় না, কাজের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ হতে হয়।
তোমার দেখা নাইরে তোমার দেখা নাই:
আপনি হাজারখানেক আবেদন করার পরে কপাল ভালো হলে কিছু পাবেন বলে ধরে নেবেন।যদি না পান তার মানে আপনি দাবা গুটি চালতে পারেন না অথবা এই দান আপনার জন্যে ছিল না। এমনটিও হতে পারে যে আপনি আয়নায় নিজেকে দেখেন না-এর মানে, আপনি হিসাবে কাঁচা; যোগ্যতা আছে এক ধাপ ওঠার কিন্তু উঠতে চান ১০ ধাপ কিন্তু কপাল বা নিষ্ঠা আপনার নেই।
স্কলারশিপ এর ফ্যাকটর অনেক হতে পারে- শুধু cgpa দিয়েই ইহাকে পাওয়া যায় না। তাই কোথায় ফাকটা রয়ে গেছে তা বুঝতে হবে। সবসময় যে যোগ্য ব্যক্তি বৃত্তি পায় এই কথাটাও ভাবা ঠিক নয়। বৃত্তি আর সোনার হরিণ একই কথা।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া:
অনেক সময়ই সময় মতন সুযোগ না নেয়ার কারনেও অনেক সুযোগ হারানো হয় তাই উচিত হবে নিজের যোগ্যতা এবং ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাগুলো আগে ভাগে বুঝে চেষ্টা করা।
শেষ কথা:
নিরাশ হওয়ার জন্যে এই লেখাটি লেখা হয়নি বরং বোঝানোর জন্যে বলা হয়েছে…স্কলারশিপের কথা চিন্তা করতে হলে যোগ্যতা এবং হিসাবে পটু হতে হবে সেইসাথে হতে হবে একটু অন্যরকম। অনেকসময় দেখবেন আপনার ক্লাসের “বেক্কল আর গাধা”ও বৃত্তি পেয়ে গেছে কিন্তু আপনি পাননি…কেন? খুব সহজ সেই বান্দা ঠিক সময়ে ঠিক মোড়কে নিজেকে উপস্থাপন করেছে যা আপনি কোনো কারনে তখন পারেননি। ভাবুন, দেখুন এবং শিখুন…সবকিছু সহজে আসলে সবাই বৃত্তি পেতো তাই কিছু ঠিক-বেঠিক থাকবেই এই নিয়ে নিরাশ হবার কিছু নেই।
লেখার সাথে একটি বিনীত অনুরোধ রইলো তাদের উদ্যেশ্যে যারা মুড়ি-মুড়কির মতন বেশ কয়টি বৃত্তি একই সাথে পেয়ে চিন্তা করতে এতই সময় নেন যে বৃত্তি আপনি গ্রহণ না করলেও ওয়েটিং লিস্টে অন্যজনকে ডাকবার আর সুযোগ থাকে না। আর তারা যারা বৃত্তি পেয়ে যান কিন্তু তার পেছনের যে শর্তগুলো দেয়া হয় তা পূরন করার যোগ্যতা রাখেন না যার ফলে মাঝপথে এসে বন্ধ করে দেন। দয়া করে সুযোগগুলো নষ্ট করবেন না, সময় মতন নিজের দিকে তাকিয়ে বুঝে ঠিক করুন কি করবেন যাতে অন্যের সুযোগটা নস্ট না হয়।
DAAD Scholarship: The perks of staying hungry!
KAAD scholarship
Heinrich Böll Stiftung: under graduate and graduate scholarship
Dr. Anita Borg Memorial Scholarship কেবলমাত্র নারীদের জন্যে
সিজিপিএ খারাপ, এই রেজাল্ট দিয়ে আমার স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভবনা কতটুকু?
পিএইচডি কি জিনিস? খায় না মাথায় দেয়?
কিভাবে লিখবেন প্রফেসরকে? how to approach a professor
[…] […]