সিটি রেজিস্ট্রেশানের নতুন নিয়ম এবং আমাদের করণীয়
ইউসুফ দিনার
মাস্টার্স ইন কম্পিউটেশনাল মেকানিক্স
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখ
জার্মান এমব্যাসি প্রতি সেমিস্টারের নতুন নিয়মের প্যাঁরা বলতে গেলে এখন সাধারণ ব্যাপারে পরিণীত হইসে। ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সালের ভেতর নানা নতুন বিধিনিষেধের মধ্যে ব্লক অ্যাকাউন্ট জার্মান ব্যাঙ্কে খোলা থেকে শুরু করে বাসস্থান দেখান আর নানা নিয়ম চালু হইসে। সম্প্রতি উইন্টার ২০১৫/১৬ যারা আসছে তারাও একটা নতুন নিয়মের সম্মুখীন হইসে। সেইটা হল সিটি রেজিস্ট্রেশনের নতুন নিয়ম। জার্মানি আসার পর পর যে কাজগুলো আগে শেষ করা লাগে তা হল:
১। হেল্থ ইনস্যুরেন্স না থাকলে হেল্থ ইনস্যুরেন্স করিয়ে নেয়া- সাধারণত ইউনিভার্সিটিতে ইনস্যুরেন্সের লোক আসে। তারা করে দেয়।
২। ইউনিভার্সিটির এনরোলমেনট শেষ করা- স্টুডেন্ট ডেস্ক থেকে এইটা সবার আগে করে নেবেন।
৩। সিটি রেজিস্ট্রেশন করা- চেষ্টা করবেন এইটা প্রথম সপ্তাহে সেরে ফেলার।
৪। ট্যাক্স আইডি নেয়া- যদি জব করার প্ল্যান থাকে। পরে করালেও হবে।
৫। ব্লক অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ করা- ব্যাঙ্কে পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন আর অ্যাক্টিভ করতে ৩/৪ দিন সময় নেবে।
এখন সিটি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ট্যাক্স আইডি নেয়া এবং ব্লক অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ করা সম্ভব না। তাহলে এইটার গুরুত্বটা বুঝা কঠিন ব্যাপারা না। জার্মানিতে ”স্টুডেন্ট হল” পেতে কমপক্ষে ৪ মাস সময় লাগে। যদিও এলাকা ভেদে কমবেশি দেখা যায়। সিটি রেজিস্ট্রেশন করতে আগে একটা অ্যাড্রেস হলেই হত। সামার ২০১৪ সাল অবধি যারা আসছেন স্টুডেন্ট হিসেবে তারা কারো সাথে শেয়ার করে থাকত প্রথম ৪/৫ মাস এবং সিটি রেজিস্ট্রেশনের অ্যাড্রেস দিত, যে সিনিয়রের রুমে উঠসে তার ঠিকানা। যদিও রুম শেয়ার করাটা নিষেধ কিন্তু শুরুতে বড় শহরে প্রাইভেট ফ্ল্যাট পাওয়া যায় না. তাই শেয়ার করা লাগে। ছোট শহরে অবশ্য একটা কিছু পাওয়া যায়। তাই এই পেইনটা শুধু বড় শহরবাসীদের, যেমন মিউনিখ।
সিটি রেজিস্ট্রেশনের নতুন নিয়ম অনুসারে অ্যাড্রেসের সাথে হাউস-মাস্টার/ বাসার মালিকের সিগনেচারসহ চুক্তিনামা দেখাতে হবে। তাহলে শেয়ার যারা করতেছে, তারা হাউস মাস্টারের কাছে যেতে পারবে না বলে কি সিটি রেজিস্ট্রেশন করবে না? অবশ্যই পারবে শুধু সঠিক পদক্ষেপ নিলেই কাজটা সহজ হয় যাবে।
তাহলে কি সেই পদক্ষেপ?
১। আপনি দেশে এমব্যাসি সম্মুখীন হওয়ার আগে বাসস্থান হিসেবে যে হোস্টেল বুকিং দিয়েছেন সেইটার মেয়াদ যদি থাকে তাহলে সেই হোস্টেলের অ্যাড্রেস দিয়ে করে ফেলুন আপনার সিটি রেজিস্ট্রেশন। মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে বুকিং দেন। কিছু সস্তা হোস্টেলের মধ্যে A&O Hostel, Smart Stay অন্যতম।
২। যাদের প্রাইভেট ফ্ল্যাট আছে তারা আপনাকে অ্যাড্রেস দিয়ে সাহায্য করতে পারে যদি তাদের সেই মাপের ফ্ল্যাট এরিয়া থাকে
৩। ইউনিভার্সিটি হাউস কন্ট্রোল অফিসে আপনার প্রবলেম জানান।
৪। স্টুডেন্ট হোস্টেল যেগুলোয় আবেদন করেছিলেন সেইগুলাই আপনার প্রবলেম জানান।
৫। প্রাইভেট ফ্ল্যাট খুঁজুন।
এলাকা ভেদে নিয়মের শিথিলতা দেখা যায়। আপনি হাউস-মাস্টারের সাথে একবার কথা বলে দেখুন, যে সে এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবে কিনা এবং ইচ্ছুক কিনা। পরিশেষে বলতে চাই ধৈর্য্য হারা হলে হবে না। একটা একটা করে সম্পন্ন করে যান।